নিউজবাংলা: ০৬ সেপ্টেম্বর, রবিবার:
ঢাকা: সশস্ত্র সংগঠন ইয়েকিনিয়ান পারাসতিনা জিন বা নারীদের সুরক্ষা ইউনিট (ওয়াইপিজে)। সংগঠনটির সবাই নারী।

আইসিস যখন ইরাক থেকে সিরিয়ার দিকে অগ্রসর হতে শুরু করে তখন সীমান্ত সংলগ্ন অঞ্চলে ছোট ছোট যোদ্ধা দল সংগঠিত হতে থাকে। এর মধ্যে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে সংগঠিত নারীদের সুরক্ষা ইউনিট নামে দলটি আইসিসের হাত থেকে স্থানীয়দের সুরক্ষা দিতে লড়ে যাচ্ছে। এই দলটিরই সবচেয়ে সাহসী এক যোদ্ধার নাম রেহানা। এই তরুণী একাই কমপক্ষে একশ আইসিস যোদ্ধাকে হত্যা করেছেন।
সিরিয়ায় আইসিস অনুপ্রবেশের পর থেকেই রেহানাদের দলটি সক্রিয়। কিন্তু রেহানা পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলোর শিরোনামে আসেন আইসিস যখন সিরিয়ার সীমান্ত শহর কোবান আক্রমণ করে। এই সময় ওয়াইপিজে প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং রেহানার অস্ত্র হাতে শান্তির প্রতীক দেখানো ছবি ভার্চুয়াল জগতে ঝড় তোলে। তার ওই ছবি গত বছর কমপক্ষে পাঁচ হাজারবার রিটুইট হয়েছে।
এই ঘটনার পরপরই কিছু পত্রিকা দাবি করে, রেহানাকে আইসিস শিরশ্ছেদ করে হত্যা করেছে। তবে তার এক ঘনিষ্ট বন্ধু জানান, রেহানা আইসিসের হাত থেকে অক্ষত অবস্থায় পালিয়ে এসেছেন। তিনি এখন কোবানের বাইরে এবং নিরাপদেই আছেন। রেহানা অত্যন্ত দক্ষ একজন গুপ্তঘাতক এবং নিজ শহরকে আইসিসের হাত থেকে রক্ষায় লড়ে যাচ্ছেন।
অবশ্য রেহানার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন এরকম কিছু সাংবাদিক তার একাই একশ আইসিস হত্যার গল্প উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে অনেকে বিশ্বাস করেন, তাকে আইসিসের রোষ থেকে বাঁচানোর জন্যই সাংবাদিকরা আইসিস হত্যার গল্পটিকে মিথ্যা বলে প্রচার করছে।
ইংরেজি গণমাধ্যমগুলোতে রেহানার দল এখন ‘গার্ল উইথ গানস’ নামে পরিচিতি পেয়েছে। এরা এখন মধ্যপ্রাচ্যে নারীদের ভাবমূর্তি সম্পর্কে বিশ্বকে নতুন ধারণা দিচ্ছে। এছাড়া যেখানে ইউরোপ আমেরিকা ও এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চল থেকে নারীরা যৌনযুদ্ধের জন্য আইসিসে যোগ দিচ্ছে অথবা আইসিসের আস্তানায় ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হওয়ার বীভৎস গল্পে পত্রপত্রিকা ভারাক্রান্ত তখন রেহানাদের এই প্রতিরোধ যুদ্ধ অনন্য এক প্রেরণা হয়ে সামনে এসে হাজির হয়েছে।
কুর্দি প্রতিরোধ বাহিনীর প্রতীকে পরিণত হয়েছেন রেহানা। আর এতে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রায় ১০ হাজার কুর্দি নারী ওয়াইজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তারা আইসিসকে সীমান্ত থেকে খেদিয়ে বিদায় করতে লড়ে যাচ্ছে।
তবে আইসিসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড় সাহসী নারীর গল্প এটি একমাত্র নয়। এর আগে গত বছর আরি মিরকান নামে এক তরুণী কোবানের কাছে আত্মঘাতি এক হামলায় ১০ আইসিস যোদ্ধাকে উড়িয়ে দেয়। এতে করে বেঁচে যায় তার গ্রাম।

নিউজবাংলা/একে