নিউজবাংলা- ১৮ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার:

 

নিউজবাংলা ডেস্ক: মাগুরার মহম্মদপুরে মধুমতী নদীতে ধরা পড়ল ডলফিন প্রজাতির বিপন্ন জলজ স্তন্যপায়ী প্রাণী শুশুক। বৃহস্পতিবার সকালে শিরগ্রাম এলাকায় স্থানীয় জেলে কিরণ মাঝির জালে শুশুকটি ধরা পড়ে। পানির ওপরে তোলার পর শুশুকটি ছটফট করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। দীর্ঘদিন পরে এই নদীতে শুশুকের দেখা পাওয়া গেল বলে জেলেরা জানিয়েছেন। শুশুকটি দেখতে উৎসুক লোকজন ভিড় জমান।

 

 

জানা গেছে, একসময় প্রতিটি নদীতেই শুশুকের দেখা মিলত। বর্তমানে তেমন আর দেখা মেলে না এই জলজ প্রাণীটির। জানা যায়, জেলেরা মাছ ধরতে শুশুকের তেল ব্যবহার করার জন্য শুশুক শিকার করছেন। এর ব্যাপকতা এতই বেশি যে বহু জেলে মাছ ধরা ছেড়ে শুশুক ধরার কাজেই নদীতে নেমে পড়েন। মাছ ধরতে জেলেরা শুশুকের তেল ব্যবহার করছেন। একটি নির্দিষ্ট এলাকায় শুশুকের তেল ছিটিয়ে জেলেরা পাঙ্গাশসহ বিভিন্ন মাছ ধরছেন।

একশ্রেণির জেলের কারেন্ট জালে আটকে শুশুক মারা পড়লেও দেখার কেউ নেই। একটি শুশুক ধরতে পারলেই দুই হাজার টাকা আসে। আর প্রতি কেজি তেল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। এ অবস্থা চলতে থাকলে শুশুক কত দিন টিকে থাকবে, সেটাই এখন ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নদীতে ছয় প্রজাতির ডলফিন দেখা যায়। এদের মধ্যে সচরাচর যেটি চোখে পড়ে তার নাম শুশুক বা শিশু। এদের দৈর্ঘ্য প্রায় ২ দশমিক ৫ মিটার পর্যন্ত হতে পারে এবং ওজন প্রায় ১০০ কেজি হয়। গবেষকরা বলছেন, প্রতিবছর যে সংখ্যক শুশুক পরিবেশদূষণের ফলে মারা পড়ে, তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি মারা পড়ছে জেলেদের জালে আটকা পড়ে।

মধুমতীপারের ঢুষরাইল গ্রামের জেলে মানিক রাজবংশী (৬০) বলেন, শৈশব থেকে তিনি পদ্মার শাখা মধুমতী নদীতে মাছ ধরছেন। একসময় নদীতে প্রচুর শুশুক দেখা গেলেও এখন আর দেখা যায় না। কারেন্ট জালে আটকা পড়ে প্রতিবছর প্রচুর শুশুক মারা পড়ায় প্রজাতিটি বিপন্নের তালিকায় চলে গেছে। এ ছাড়া নদীর গভীরতা হ্রাস ও চর পড়ার কারণেও শুশুক বিলুপ্তির পথে।

নিউজবাংলা/একে