নিউজবাংলা: বুধবার, ১জুলাই:
ঢাকা : ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকারকে অপদার্থ আখ্যায়িত করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন,

‘জনগণকে সজাগ হতে হবে। যারা দেশকে ভালবাসে, পরিবারকে ভালবাসে, মুক্তিযুদ্ধকে সম্মান করে তাদের জেগে উঠতে হবে। অন্যায়, জুলুম, অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়তে হবে। তবেই দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা ও গণতন্ত্র ফিরে আসবে।’
মঙ্গলবার রাজধানীর লেডিস ক্লাবে ২০ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশ লেবার পার্টির ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান। পরিচালনা করেন মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদী।
খালেদা জিয়া বলেন, ‘জাতিকে পুরোপুরি ধ্বংস করতে আওয়ামী লীগকে পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসানো হয়েছে। এখন তাদের দীর্ঘদিন ক্ষমতায় রাখারও চেষ্টা করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন কথা বলে যাচ্ছি, কিন্তু তাদের কোনো গায়ে লাগছে না। জাতীয় সংসদে কোনো আলোচনা হয় না। সংসদে কোনো এজেন্ডা থাকে না। এটা গান-বাজনার আসর হয়ে গেছে। সংসদে বিরোধীদল বলে কিছু নেই। সেখানে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতও হয় না।’
এই অবস্থা থেকে উত্তোরণের পথ হিসেবে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হলো নির্বাচন করা এবং সেই নির্বাচনে সকল দলের অংশ গ্রহণ নিশ্চিত করা। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়া, যাতে কোনো কারচুপি না হয়। তবে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠ নির্বাচন সম্ভব নয়। সারা বিশ্ব এই নির্বাচন কমিশনকে অথর্ব বলে আখ্যা দিয়েছে।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘প্রশাসনে আজকে ভালো ভালো কর্মকর্তাদের ডিঙিয়ে দলীয় লোকদের পদন্নোতি দেয়া হচ্ছে। পুলিশ প্রশাসনেও একই অবস্থা। পুলিশ প্রশাসন আইন-শৃঙ্খলার ধার ধারে না। দেশে মানবাধিকার বলে কিছু নেই। কেউ সরকারের সমালোচনা করতে পারে না। সমালোচনা করলেই তাকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাষ্ট্রের আইন মানছে না। তারা নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। সীমান্ত অরক্ষিত রেখে জনগণের টাকায় কেনা গুলি দিয়ে দেশের মানুষ হত্যা করছে সরকার।’
সীমান্তে প্রতিনিয়ত মানুষ খুন হচ্ছে- এমন অভিযোগ করে খালেদা বলেন, ‘সরকার অপদার্থ, অবৈধ তাই তারা কোনো প্রতিবাদতো করবেই না, অন্যকেও প্রতিবাদ করতে দিচ্ছে না।’
সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী বলে আজ আর কিছু নেই। সেখানে তাদের কোনো অবস্থান আছে কিনা বলা মুশকিল। তারা শুধু জনগণের ট্যাক্সের টাকায় কেনা গুলি জনগণের বিরুদ্ধেই ব্যবহার করছে।’
খালেদা জিয়া আরো বলেন, ‘আজকে মিয়ানমারের সঙ্গেই আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী পারে না। অথচ আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী কত চৌকষ ছিল, আপনার তা জানেন। আজকে সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে ধরে নিয়ে মিয়ানমার অসম্মান করে। দেশের সম্মান আর কোথায় রইলো?’
লেবার পার্টির এই ইফতার পার্টিতে অংশ নেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজ উদ্দীন আহমদ, সাবেক প্রোভিসি আ ফ ম ইউসূফ হায়দার, অধ্যাপক ড. সদরুল আমিন, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ, অর্থনীতিবিদ মাহবুব উল্লাহ।
এছাড়াও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আমিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, ব্যারিস্টার হায়দার আলী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক তৈমূর আলম খন্দকার, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ আব্দুল মালেক প্রমুখ অংশ নেন ইফতার পার্টিতে।
২০ দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাৎ হোসেন সেলিম, জামায়াতের কর্ম পরিষদের সদস্য আমিনুল ইসলাম, ডা. রিদওয়ান উল্লাহ শাহেদী, জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ নেজামী, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনূর রহমান, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ, এনডিপির চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোতুর্জা, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ঈসা, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাঈদ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

নিউজবাংলা/একে