শিক্ষককে পিটিয়ে আহত করলেন চেয়ারম্যান
নিউজবাংলা: ৫জুলাই, রোববার:
মির্জাপুর(টাঙ্গাইল)সংবাদদাতা:
টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নিজ শিক্ষকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
শনিবার বিকেলে উপজেলার উয়ার্শী ইউনিয়নের বন্দে কাওয়ালজানী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত শিক্ষকের নাম সুভাষ চন্দ্র মন্ডল ওরফে মন্টু (৬০)। আহত শিক্ষককে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানায় অভিযোগ করতে গেলে থানা পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ করেনি বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, গত চার বছর আগে মির্জাপুর উপজেলার ৭ উয়ার্শী ইউনিয়নের বন্দে কাওয়ালজানী গ্রামের শিক্ষক সুভাষ চন্দ্র মন্ডলের ছেলে প্রবাস চন্দ্র মন্ডলের সঙ্গে পাশ্ববর্তী গাজীপুর জেলার কাপাশিয়া উপজেলার নয়নটুক বাজার এলাকার সুজিত চক্রবর্তীর মেয়ের বিয়ে হয়।
বিয়ের পর প্রবাস মন্ডল পুরান ঢাকার স্বামীবাগ এলাকার নারিন্দা টিকাটলিতে বোকার বিক্রি ব্যবাসার সুবাদে তার স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকত। বিয়ের তিন বছরের মাথায় প্রবাসের বোরকার ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে গত এক বছর আগে স্ত্রী প্লাবিতা রানী মন্ডলকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি মির্জাপুরের বন্দে কাওয়ালজানীতে ফিরে আসে। কিন্তু স্ত্রী প্লাবিতা রানী গ্রামের বাড়িতে থাকতে আপত্তি জানালে এ নিয়ে তাদের মধ্যে সর্ম্পকের অবনতি ঘটে। এ ঘটনায় প্লাবিতার মা মমতা রানী চক্রবর্তী মির্জাপুর উপজেলার ৭ নং উয়ার্শী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহেল শাফির কাছে বিচার প্রার্থনা করে।
শনিবার বিকেলে প্লাবিতা রানী চক্রবর্তী তা মা মমতা রানী চক্রবর্তী বোন জামাই মনির হোসেন ও শাহেদ আলী ঘটককে নিয়ে চেয়ারম্যানের কাছে আসলে চেয়ারম্যান তাদের নিয়ে ছোট বেলার গৃহ শিক্ষক সুভাষ চন্দ্র মন্ডলের বাড়িতে গিয়ে প্রবাস কোথায় আছে জানতে চায়। এসময় সুভাষ চন্দ্র মন্ডল প্রবাস কোথায় আছে জানেন না বললে চেয়ারম্যান তার উপর চড়াও হয় এবং তাকে পিটাতে থাকে। এসময় চেয়ারম্যানের সঙ্গে থাকা তার চাচাত ভাই উমর আলীও শিক্ষক সুভাষ চন্দ্র কে পেটাতে থাকে। তাদের পিটুনীতে সুভাষ চন্দ্র মন্ড মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এতে তার মাজাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে চেয়ারম্যান কর্তৃক শ্বশুরকে পিটানোর ঘটনায় বিচার প্রার্থী সুভাষ চন্দ্র মন্ডলের ছেলের বৌ প্লাবিতা রানী মন্ডল ও তার মা মমতা রানী চক্রবর্তী হতবম্ভ হয়ে পড়ে এবং প্রতিবাদ করতে থাকে।
পরে সন্ধায় সুভাষ চন্দ্র মন্ডলের ছেলে প্রবাস মন্ডল এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানায় অভিযোগ করতে গেলে থানা পুলিশ অভিযোগ গ্রহন না করে তাকে ফিরিয়ে দিয়েছে বলে সে প্রবাস সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো মাইনউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ হলে তিনি বলেন শিক্ষক প্রবাস চন্দ্র মন্ডল ও তার ছেলে থানায় এসেছিলেন। ঘটনা শুনার পর তারা নিজেরাই বলেছেন চেয়ারম্যান ওই ঘটনার পর শিক্ষককের হাতে ধরে ক্ষমা চেয়েছেন। তাই এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ নেয়া হয়নি।
এদিকে ছাত্র কর্তৃক শিক্ষককে পিটানোর ঘটনা জানাজানি হলে সচেতন এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মির্জাপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন চেয়াম্যান কর্তৃক তার নিজের শিক্ষকের গায়ে হাত তোলা নিন্দনীয় কাজ। এ ঘটনা অবশ্যই নিন্দনীয়।
এ ব্যাপারে উয়ার্শী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহেল শাফির সঙ্গে তার মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগরে চেষ্টা করলে তিনি রিসিভ করেননি।
নিউজবাংলা/একে