নিউজবাংলা: ৫ জুলাই, রোববার:

ঢাকা : একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা আগামী ২৬ জুলাই পর্যন্ত বিলম্ব ফি ছাড়া ভর্তি হতে পারবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

এছাড়া একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি জটিলতার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন তিনি।  রবিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, ‘এবার অনলাইনে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির বিষয়টি বড় ও ব্যাপক। কিন্তু আমাদের প্রযুক্তিগত ক্ষমতা ও দক্ষতা সীমাবদ্ধ। তাই এ বিশদ কর্মকাণ্ডে কিছু ত্রুটি হয়েছে। কেউ সঠিক প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারেননি, এক কলেজের জায়গায় অন্য কলেজের নাম চলে গেছে। এমনকি ছেলেদের কলেজে মেয়েদের নাম চলে গেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এমন অনেক ভুলত্রুটি হয়েছে। এ কারণে আমাদের যে সব প্রিয় শিক্ষার্থী, সম্মানিত অভিভাবক ও শ্রদ্ধেয় দেশবাসী সমস্যায় পড়েছেন তাদের কাছে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমাদের ভর্তি ব্যবস্থাকে উন্নত মানে নিয়ে যেতে আধুনিক, সহজতর ও প্রকৃতপক্ষে বিড়ম্বনামুক্ত করার লক্ষ্যে আমাদের ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।’

মন্ত্রী বলেন, ‘এখনো যারা ভর্তি হতে পারেনি, তারা কোনো প্রকার বিলম্ব ফি ছাড়াই আগামী ৩ সপ্তাহের মধ্যে একাদশে ভর্তি হতে পারবে। চারটি পর্যায়ে এই ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। আমি নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে চাই, ভর্তি জটিলতার জন্য কোনো শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। হয়তো একটু বিলম্ব হচ্ছে, একটু উদ্বেগ হয়েছে।’

নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, রবিবার পাওয়া সর্বেশেষ তথ্য অনুযায়ী ৯ লাখ ২৩ হাজার ১০৫ জনের ভর্তি সম্পন্ন হয়েছে।

এবার নতুন পদ্ধতিতে ১১ লাখ ৫৬ হাজার ২২৪ জন শিক্ষার্থী একাদশে ভর্তিতে আবেদন করেছে বলে জানান তিনি।

চার ধাপে ভর্তির ব্যাখ্যা দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘সবাই প্রথম ধাপে এসে বুঝতে পারবে না, পারলেও সে হয়তো টিকবে না। টিকলেও হয়তো তার পছন্দমতো হবে না। তাই শিক্ষার্থী যাতে সময় নিয়ে বিবেচনা করে পরবর্তী সুযোগগুলো নিতে পারে এ জন্য চার ধাপে ভর্তি করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘যে সব শিক্ষার্থী প্রথম ও দ্বিতীয় মেধা তালিকায় নির্বাচিত হয়েও কোনো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়নি বা নির্বাচিতই হয়নি, তারা তৃতীয় ধাপে কোনো ফি ছাড়া পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে শূন্য আসনের বিপরীতে আবেদন করতে পারবে। ৯ ও ১০ জুলাই তারা আবেদন করতে পারবে। তালিকা প্রকাশ করা হবে ১১ জুলাই, এ শিক্ষার্থীরা ১২ জুলাই ভর্তি হবে।’

নাহিদ আরও বলেন, ‘যারা ভর্তির জন্য আবেদন করেনি কিংবা সুযোগ পেয়ে ভর্তি হয়নি কোনো ফি ছাড়া তারা ১৩ থেকে ২১ জুলাইয়ের মধ্যে আবেদন করতে পারবে। আবেদনগুলো বিবেচনা করে ২৩ জুলাই তালিকা প্রকাশ করা হবে। নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা ২৫ ও ২৬ জুলাই ভর্তি হতে পারবে।’

প্রসঙ্গত, প্রথমবারের মতো এবার একাদশে অনলাইন ভর্তি পদ্ধতি চালু করে সরকার। এ পদ্ধতি নিয়ে জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় শিক্ষার্থীরা নানা বিড়ম্বনা ও ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। এরই মধ্যে প্রকাশিত একাদশ শ্রেণীর প্রথম মেধা তালিকায় ভর্তির সুযোগ পেয়েও দুই লাখ শিক্ষার্থী এখনও ভর্তি হতে পারেননি। অথচ শনিবার তাদের ভর্তি হওয়ার শেষ দিন ছিল।

একাদশে প্রথম মেধা তালিকায় ভর্তির জন্য নির্বাচিত করা হয়েছিল ১০ লাখ ৯৩ হাজার ৩৭৪ শিক্ষার্থীকে। আর দ্বিতীয় মেধা তালিকায় নির্বাচন করার কথা ছিল ৬২ হাজার ৮০০ শিক্ষার্থীকে। তবে ফল প্রকাশের পর নানা জটিলতায় দ্বিতীয় মেধা তালিকার সঙ্গে আরও ৩০ থেকে ৪০ হাজার শিক্ষার্থী যোগ হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু শনিবার ভর্তির শেষ দিনে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দেখা গেছে, ৮ লাখ ৬১ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। রাত ১২টায় আরও কিছু শিক্ষার্থী যোগ হবেন। কিন্তু ধারণার চেয়ে ভর্তি হতে না পারা শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় কয়েকগুণ বেড়ে গেছে, যা নিয়ে উৎকণ্ঠায় আছেন ভর্তি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

এর আগে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ফল প্রকাশ নিয়েও বেশ জটিলতা হয়। কয়েক দফায় পেছানোর পর ২৮ জুন ফল প্রকাশ করে।
নিউজবাংলা/একে