নিউজবাংলা: ১৫ জুলাই, বুধবার :

অর্ণব আল আমিন:

টাঙ্গাইলের বাসাইলে জমে উঠেছে ঈদের বাজার। প্রতি বছরের ন্যায় এবার ও প্রাধান্য পেয়েছে ভারতীয় টিভি চ্যানেলের জনপ্রিয় সিরিয়ালের অভিনেত্রীদের নামে রাখা বিভিন্ন পোশাক। গত ঈদে পাখি আর ঝিলিকের পর এই ঈদে চাহিদার শীর্ষে রয়েছে ‘কিরণমালা’।

মান ও দাম নিয়ে অনেক কথা থাকলে ও বিভিন্ন বয়সী নারীরা চোখ বুজে কিনছে ‘কিরণমালা’। চলছে কিরণমালার ঝড়। আর এর সুযোগ ও নিচ্ছেন বিক্রেতারা। কোন পোশাকে পুঁতি বা পাথরের কাজ করা থাকলেই নাম দিয়ে দেয়া হচ্ছে ‘কিরণমালা’। এই নামের ওপরেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছে কিশোরী-তরুণীরা। ক্রেতারা বলছেন, বিভিন্ন কোম্পানি তাদের উৎপাদিত কাপড়ে শুধু ‘কিরণমালা’ স্টিকার লাগিয়ে দিয়েই বাজারে ছাড়ছে। তাই দামের ক্ষেত্রে ও রয়েছে অনেক হেরফের। কেনাকাটার ভিড়ে ভালমন্দ বেছে নেয়ার সুযোগ খুব কম। তাই যেটার দাম বেশি ক্রেতারা সেটাই চোখ বন্ধ করে কিনছেন। উপজেলার বিভিন্ন বিপণী বিতান ঘুরে দেখা গেছে, সব দোকানেই উপচেপড়া ভিড়। সরেজমিনে দেখা যায়, ছোটদের ‘কিরণমালা’ মিলছে ৫শ থেকে ১৫শ টাকার মধ্যে। আর বড়দের ‘কিরণমালা’র দাম মান ভেদে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা দামের ‘কিরণমালা’র চাহিদা সবচেয়ে বেশি বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন। দুই ভাই গার্মেন্টসের এর মালিক জানান, ‘ভারতীয় বিভিন্ন সিরিয়ালের নামের থ্রিপিসের কদর বেশি। যে কারণে তারা কিরণমালা, ইস্কেলিলা, মাসাক্কালি, জিপসি, ঝিলিক, বাহা, বিন্দাস, কটকটি, বজ্রমালা বিচিত্র এসব নামের থ্রিপিসের মজুত ও করেছেন প্রচুর। নামের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে স্মার্ট ফ্যাসনের সবুজ বলেন, মেয়েরা আইসাই বলে ‘কিরণমালা’ পোশাক দেখান। দেশী পোশাক দেখাইলে ওরা চলে যায়। বাসাইল উত্তর পাড়ার মুক্তি ও কেয়া নামের দুই তরুণী ‘কিরণমালা’ পোশাক কিনতে এসেছেন। কেন ‘কিরণমালা’ কিনবেন? জানতে চাইলে মুক্তি বলেন, ‘অন্য বান্ধবীরা কিনেছে, এ জন্য কিনতে চাই। ‘কিরণমালা’ পোশাকটি আসলে কেমন? এ প্রশ্নের উত্তরে কেয়া বলেন, ‘সেটি ঠিক বলতে পারবো না, দোকানদারদের বললেই ওরা দেখায়। বাসাইলের দর্জিদের ও একই অবস্থা। দম ফেলার সময় নেই কার ও। দিনে-রাতে চলছে মেশিন। অনেক টেইলার্সে রাত-দিন কাজ করতে হচ্ছে কারিগরদের। তারপর ও সময় মতো কাপড় ডেলিভারি দিতে পারছেন না তারা। সময় থাকায় প্রতিদিন কয়েকশ নতুন অর্ডার নিতে হচ্ছে বলে হ্যাপি টেইলার্সের মালিক বলেন, আর নতুন করে অর্ডার নেয়া সম্ভব হবে না। কারণ যেগুলো জমা আছে এগুলো ডেলিভারি দিতে চাঁদ রাত পার হয়ে যাবে। অনেকে আবার কাপড়ের বাজার শেষ করে এসেছে জুতা আর কসমেটিকে। আর তাই জুতার দোকান আর স্টেশনারি দোকানগুলোতেও নারী-শিশুদের উপচেপড়া ভীড়। কাপড়ের সঙ্গে ম্যাচিং করে জুতা ও কানের দুল-মালা খুঁজতে ব্যস্ত নারীরা। দাম যাই হোক না কেন ম্যাচিং করা জিনিস পেলেই হলো।

 

নিউজবাংলা/একে