নিউজবাংলা: ২৫ ডিসেম্বর, শুক্রবার:
ঢাকা: পৌরসভা নির্বাচনে আচরণবিধি লংঘনের অভিযোগে মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে সরাসরি ব্যবস্থা নেয়া থেকে পিছু হটেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বিভিন্ন সময়ে আচরণবিধি লংঘনের অভিযোগে ২২ জন মন্ত্রী-এমপির একটি তালিকা করে ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল কমিশন। আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর ওই উদ্যোগ থেকে সরে আসে ইসি।
বৃহস্পতিবার রাতে দু’জন সংসদ সদস্যকে শুধু সতর্ক করে চিঠি দেয়া হয়। বাকি ২০ জন মন্ত্রী-এমপির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি কমিশন। তবে সামনের দিনগুলোতে কোনো মন্ত্রী-এমপি আচরণবিধি লংঘন করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে ইসি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আচরণবিধি লংঘনের ঢালাও অভিযোগে মন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন মন্ত্রী-এমপিদের বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া থেকে সরে এসেছে। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
তবে আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, কারও চেহারা দেখে নয়, যে আচরণবিধি ভঙ্গ করছে তার বিরুদ্ধেই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ব্যবস্থা নিতে তাৎক্ষণিক নির্দেশনা দিয়েছি। সবদিক থেকে আমরা কঠোর থাকব।
সূত্র আরও জানায়, আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগের তালিকায় রয়েছেন : স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম (সিরাজগঞ্জ-১), ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম (রাজশাহী-৬), তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু (কুষ্টিয়া-২), তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক (নাটোর-৩), সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান আহমেদ (লালমনিরহাট-২), একেএম ফজলুল হক (শেরপুর-৩), আবদুর রহমান (ফরিদপুর-১), সোহরাব উদ্দিন (কিশোরগঞ্জ-২), আবদুল কুদ্দুস (নাটোর-৪), এমএ মালেক (ঢাকা-২০), মহীউদ্দীন খান আলমগীর (চাঁদপুর-১), নাহিম রাজ্জাক (শরীয়তপুর-৩), আয়শা ফেরদাউস (নোয়াখালী-৬), আবদুর রউফ (কুষ্টিয়া-৪), মমতাজ বেগম (মানিকগঞ্জ-২), দিদারুল আলম (চট্টগ্রাম-৪), নাজমুল হাসান (কিশোরগঞ্জ-৬), আনোয়ারুল আবেদীন খান (ময়মনসিংহ-৯), কবিরুল হক (নড়াইল-১) ও গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২)।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইসির কর্মকর্তারা বলেন, বাকি মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার তেমন কোনো সুযোগ থাকছে না। কারণ হিসেবে তারা বলেন, আগামী ৩০ ডিসেম্বর ২৩৪ পৌরসভায় ভোটগ্রহণের দিন নির্ধারিত রয়েছে। ভোটগ্রহণের ৩২ ঘণ্টা আগে প্রচারণা বন্ধের বিধান রয়েছে। এ হিসাবে আগামী ২৮ ডিসেম্বর মধ্যরাতে সারা দেশে প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২০ মন্ত্রী-এমপিকে সতর্ক করে চিঠি দেয়ার কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি কমিশন।
তারা বলেন, সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার ও শনিবার কমিশনাররা অফিস করবেন না। আগামী ২৭ ডিসেম্বর রোববার কমিশনাররা অফিস করলেও সোমবারই প্রচারণার সময় শেষ হচ্ছে। সুতরাং বাকিদের সতর্ক করা হলেও নির্বাচনী প্রচারের সময় শেষ হয়ে যাবে। তখন ওই চিঠির কার্যকারিতা থাকবে না।
নিউজবাংলা/একে
Comments
comments