নিউজবাংলা: ২০জুলাই, সোমবার :

বরিশাল : বরিশালের একটি অভিজাত হোটেলের ৫ম তলার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষের কাঁচ ভেঙে নিচে রাস্তায় পড়ে যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রবিবার দিবাগত রাত আড়াইটায় এই ঘটনায় নিহতের বন্ধু ওই কক্ষের আরেক বোর্ডার শওকতকে পুলিশ আটক করেছে। নিহত সুমন সিকদার (৩৫) নগরীর কাশীপুর ফিশারী রোডের আহসান মঞ্জিলের এবং আটক শওকত বগুড়া রোডের বাসিন্দা। তারা পরষ্পরের বন্ধু বলে জানা গেছে। হোটেল কক্ষ থেকে মদের বোতল তাস ও টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ।

হোটেলের রাতের ইনচার্জ মো. মাহমুদ জানান, রবিবার দুপুরের দিকে ইমরান হোসেন, পিতা আফতাব হোসেন, নথুল্লাবাদ পরিচয়ে এক ব্যক্তি ৫০৭ নম্বর ডিলাক্স কক্ষ ভাড়া নেয়। তার সঙ্গে ছিল আরেক বন্ধু শওকত। রবিবার দিনে এবং রাতে তাদের আরও অনেক বন্ধু ওই কক্ষে যাওয়া আসা করে এবং তাস-জুয়া খেলে। রাতে তারা মদ পান করে। রাত আড়াইটার দিকে কাঁচ ভাঙা শব্দ এবং বিকট শব্দে নিচে রাস্তায় কিছু পড়ে যাওয়ার শব্দ পেয়ে তারা হোটেলের পাশে রাস্তায় গিয়ে দেখেন এক ব্যক্তি রক্তাক্ত অবস্থায় ছটফট করছেন।

পরে হোটেলের লোকজন পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে শেরেবাংলা মেডিকেলে নিয়ে ভর্তি করে। পুলিশের আরেকটি দল হোটেলের ৫০৭ নম্বর কক্ষ তল্লাশি করে একটি মদের বোতল, তাস এবং নগদ কিছু টাকা উদ্ধার করে এবং সুমন সিকদারের বন্ধু শওকতকে আটক করে।

এদিকে, হাসপাতালে পুলিশের হেফাজতে থাকাবস্থায় মো. শওকত জানায়, তারা রাতে ঘুমিয়ে ছিলেন। গভীর রাতে ঘুম ভেঙে যাওয়ার পর দেখেন তার বন্ধু সুমন ভয় পেয়ে অস্বাভাবিক আচরণ করছেন। এক পর্যায়ে সুমন নিজেই কাঁচে ঘেরা হোটেলের কাঁচ ভেঙে নিচে লাফিয়ে পড়েন। শওকত ওই রাতে হোটেল কক্ষে জুয়া খেলা কিংবা মদ পান করার কথা অস্বীকার করেন। তবে তার কথাবার্তা পুলিশের কাছে অসংলগ্ন মনে হয়েছে।

শেরেবাংলা মেডিকেলের মেডিসিন বিভাগের (পুরুষ) সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. ধনঞ্জয় দে বিপ্লব জানিয়েছেন, নিহত সুমন সিকদার উপর থেকে নিচে পড়েছেন। এতে তার মাথায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক আঘাত লেগে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। মস্তিষ্কে রক্ত ক্ষরণের কারণে প্রাণপন চেষ্টার পরও তাকে বাঁচানো যায়নি, ৪টার দিকে সুমন মারা যায়। তবে কাঁচ ভেঙে তাকে ফেলে দেয়া হয়েছে নাকি নিজেই কাঁচ ভেঙে লাফিয়ে পড়েছেন, তা নিশ্চিত করতে পারেননি চিকিৎসক।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী মেট্রোপলিটনের কোতয়ালী মডেল থানার এটিএসআই মো. নাঈম জানিয়েছেন, রাতে হোটেল কক্ষে তারা কয়েক বন্ধুরা মিলে মদ পান করে জুয়া খেলেছে। ঘটনার পর হোটেল কক্ষে তার বন্ধু শওকতের কথায় অমিল থাকায় তাকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা খতিয়ে দেখার কথা বলেছে পুলিশ।

এদিকে ওই ঘটনার পর হোটেলে দায়িত্বরতরা সাংবাদিকদের হোটেলের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি। এমনকি ওই কক্ষটি দেখতে চাইলেও তারা মালিকের নিষেধ আছে বলে সাংবাদিকদের ফিরিয়ে দিয়েছেন।

 

নিউজবাংলা/একে