ঝিনাইদহে গত ৮ মাসে ৫৫টি লাশ উদ্ধার
নিউজবাংলা: ০৬ সেপ্টেম্বর, রবিবার:
আলিফ আবেদীন গুঞ্জন, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহের জেলার ছয় উপজেলায় গত ৮ মাসে ৫৫টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৫ জন বিভিন্নভাবে খুন হয়েছেন। বাকী ১৫ জনের মৃত্যু নির্ণয়ে ময়না তদন্ত করা হয়েছে।
১৩ জনের ভিসেরা রিপোর্ট এখনো আদালতে জমা হয়নি। ময়না তদন্তর রিপোর্ট নিয়ে বাণিজ্য করা হচ্ছে এমন অভিযোগ উঠেছে। মহেশপুরের জননী ও শৈলকুপার আয়েশা ক্লিনিকে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় একদিনে মারা গেছে প্রসুতিসহ ৫ জন। আজ সোমবার এ দুইটি ক্লিনিক অপচিকিৎসার অভিযোগে প্রশাসন বন্ধ করে দেয়। এছাড়া সামাজিক দ্বন্দ ও দুর্বৃত্তদের হাতে কয়েকশ মানুষ আহত হয়েছেন।
পুলিশ ও বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে ২০১৫ সালের জানুয়ারী মাসে চার জন খুন হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে খুন হয় ৮ জন। এর মধ্যে বিএসএফ জোড়া হত্যাকান্ড ঘটায় মহেশপুরের লেবুতলা সীমান্তে। সদর উপজেলার ডেফলবাড়ি গ্রামের মাঠে দুলাল ও পালশ নামে দুই যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়। মার্চ মাসে জেলায় খুন হয় ৮ জন। এরমধ্যে কোটচাঁদপুরের ভোমরাডাঙ্গা গ্রামে মুক্তিপণের দাবীতে মাদ্রাসা ছাত্র মিরাজকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এই মামলায় পুলিশ ঘাতক চক্রকে গ্রেপ্তার করে।
এপ্রিল মাসে খুন হয় ৬ জন। মে মাসে জেলায় খুনসহ বিভিন্ন ব্যক্তির ১১টি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরমধ্যে কালীগঞ্জে স্ত্রীর পরকিয়ার শিকার হন রফিউদ্দিন নামে এক মোচিকের কর্মচারী। শৈলকুপার আনন্দনগর গ্রামে স্কুল ছাত্র আশিককে হত্যা করা হয়। হরিণাকুন্ডুর ভেড়াখালী গ্রামে ভাইয়ের হাতে কলেজছাত্র কামরুজ্জামান নিহত হন।
জুন মাসে ৪ জন নিহত হন। এরমধ্যে মহেশপুরের বাঘাডাঙ্গায় বিএসএফর নির্যাতনে জাহাঙ্গীর নামে এক বাংলাদেশী নিহত হন। ব্যাপারীপাড়ার সরকারি দলের সমর্থক তরিকুলকে গুলশানপাড়ায় খুন করা হয়। এই মামলা নিয়ে নানা জটিলতা সৃষ্টি হয়। কোটচাঁদপুরের ফাদিলপুর থেকে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ তার পরিচয় এখনো মেলেনি। জুলাই মাসে লাশ উদ্ধারসহ নিহত হয় আট জন। এর মধ্যে সদর উপজেলার অচিন্তনগর গ্রামে শিশু মনিরাকে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়। মনিরা হত্যার প্রতিবাদে এলাকাবাসি ফুসে উঠেছে। এখনো মূল ঘাতকরা গ্রেপ্তার হয়নি। এই মাসে জেলায় তিন অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার হয়। কোটচাঁদপুরে এক বৃদ্ধ ও সদর উপজেলার ফুরসন্দি এবং শৈলকুপার ত্রীবেনি থেকে দুই যুবকের লাশের পরিচয় মেলেনি।
সর্বশেষ আগষ্ট মাসে মহিলাসহ ৬ জনের লাশ উদ্ধার হয়। এর মধ্যে শৈলকুপার বড়মৌকুড়ি গ্রামে গ্রাম্য সংঘর্ষে আব্দুল ওহাব নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। বাকীদের মৃত্যুর কারণ নির্ণয়ে ময়না তদন্ত করা হয়েছে। শৈলকুপার আয়েশা ক্লিনিকে রোগী হত্যার দায়ে বেশ কয়েকটি হত্যা মামলা হয়েছে ক্লিনিক মালিক ও ডাক্তারদের বিরুদ্ধে।
এ বিষয় নিয়ে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ জানান, জেলার আইনশৃংখলা পরিস্থিতি সার্বিক ভাবে ভাল। জেলায় চরমপন্থিদের কোন বিস্তার নেই। তাদের শক্তভাবে দমন করা হয়েছে। তিনি জানান, জেলায় আট মাসে যে গুলো হত্যাকান্ড ঘটেছে সবগুলোর মোটিভ ও ক্লু পুলিশ উদ্ধার করে আসামি গ্রেপ্তার করেছে।
নিউজবাংলা/একে