নিউজবাংলা: ০৬ সেপ্টেম্বর, রবিবার:

বিশেষ প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল:
সম্প্রতি গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কারণে টাঙআইলে সিএনজি অটোরিক্সায় ভাড়া বেড়েছে প্রায় ৩৫ শতাংশ। অথচ গ্যাসের দাম বৃদ্ধির পর সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেছিলেন, গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। যারা ভাড়া বৃদ্ধি করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থ্যা নেয়া হবে।

১ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সম্মেলন কক্ষে পরিবহন ভাড়া বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেছিলেন। তিনি আরো বলেছিলেন, যাত্রীবাহী মোটরযানের ভাড়া পুননির্ধারণের সুপারিশ প্রদানে বিআরটি এর চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি কমিটি রয়েছে। এছাড়া সিএনজি চালিত অটোরিকশার ভাড়া পুননির্ধারণেও ৮ সদস্যের একটি কমিটি রয়েছে। কমিটির সুপারিশ ছাড়া ভাড়া বাড়ানো যাবেনা। সুপারিশের পূর্ব পর্যন্ত আগের হারে ভাড়া নিতে হবে।
মন্ত্রীর এই গুরত্বপূর্ণ নির্দেশনা উপেক্ষা করে টাঙ্গাইলের বিভিন্ন সড়কে দেখা যায়, যাত্রীদের জিম্মি করে অধিক ভাড়া আদায় করছে সিএনজি-অটোরিক্সা। এমনিতেই যেসব সড়কে প্রতি ৬ কিঃমিঃ রাস্তায় ভাড়া থাকার কথা ৬ থেকে ৭ টাকা। সেখানে ভাড়া আদায় করা হতো ১৫টাকা। কিন্তু সম্প্রতি গ্যাসের দাম বৃদ্ধির খবর পেয়ে এসব সড়কের সিএনজি অটো রিক্সার চালকরা ১৫ টাকার পরিবর্তে ভাড়া আদায় করছে ২০ টাকা। যার শতকরা বৃদ্ধির হার দাড়ায় প্রায় ৩৫ শতাংশ। এই হারে জেলার অধিকাংশ সড়কেই সরকারি নির্দেশনার পূর্বেই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এদিকে ভাড়া বৃদ্ধির কারণে যাত্রীরা পড়েছে জনদূর্ভোগে। পূর্বের নির্ধারিত ভাড়ায় যাত্রীরা গন্তব্যস্থানে যেতে পাড়ছে না। ভাড়া বৃদ্ধির খবর না জানা অধিকাংশ যাত্রীদের ভাড়া নিয়ে পড়তে হচ্ছে বিপাকে।
এর আগে মহাসড়কগুলোতে সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশা চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন । ১ আগষ্ট থেকে মহাসড়কে সিএনজি চলাচল বন্ধ কার্যকর হয়। টাঙ্গাইলের পঞ্চাশ শতাংশ সিএনজি চলতো মহাসড়কে। বাকী পঞ্চাশ শতাংশ সিএনজি চলতো বিভিন্ন লোকাল সড়কগুলোতে। বর্তমানে মহাসড়কে সিএনজি চলাচলা নিষিদ্ধ ঘোষনার পর থেকে লোকাল সড়কগুলোতে সিএনজির চাপ বেড়েছে দ্বিগুন। লোকাল সড়কে সিএনজি অটোরিক্সা বেড়ে যাওয়ায় এদের দৈনিক আয় কমে গিয়েছিল। আর এই লোকসান পূরণ করতেই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে এসব চালকরা। এমন ধারণা যাত্রীদের।
টাঙ্গাইল-দেলদুয়ার সড়কের মিজানুর রহমান নামের এক সিএনজি যাত্রী বলেন, শান্তিকুঞ্জ মোড় থেকে পাথরাইল বাজার ৬/৭ কিঃমিঃ দুরত্ব। ভাড়া নেয়া হত ১৫ টাকা। যা এমনিতেই অতিরিক্ত ছিল। বর্তমানে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ২০ টাকা। সরকারি নির্দেশনা আসলেও ১৫টাকাই অতিরিক্ত ভাড়া হবে।
টাঙ্গাইল-নাগরপুর সড়কে টাঙ্গাইল থেকে এলাসিন পর্যন্ত ১৪ কিঃমিঃ সড়কে সিএনজি ভাড়া ছিল ৩০ টাকা। এসড়কের এক যাত্রী আবির হোসেন জানান, বর্তমানে ভাড়া আদায় হচ্ছে ৩৫থেকে ৪০টাকা। টাঙ্গাইল-বাসাইল সড়কের ভাড়া ২০ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৪০টাকা।
একাধিক সিএনজি চালক বলেন, গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কারণে কেউ কেউ বাড়তি ভাড়া আদায় করছে। তবে সিএনজি শ্রমিক সমিতি বিষয়টি মানতে নারাজ। সংগঠনটি জানিয়েছেন, কোন ভাড়া বৃদ্ধি হয়নি।
গ্যাসের দাম কমানো অন্যথায় গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সাথে অসঙ্গতি ভাড়া বৃদ্ধি রোধ করতে এ অঞ্চলের সাধারণ যাত্রীরা জোড় দাবী জানিয়েছেন।

নিউজবাংলা/একে