নিউজবাংলা: ৭অক্টোবর, বুধবার:

ঈশ্বরদী (পাবনা)প্রতিনিধি:

বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট ঈশ্বরদী পাবনা কার্যালয়ে ০৫-০৬ অক্টোবর দুই দিন ব্যাপী বার্ষিক গবেষণা কর্মসূচী পর্যালোচনা কর্মশালা-২০১৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্মশালায় বিএসআরআই এর বিজ্ঞানীরা তাঁদের স্ব-স্ব বিভাগ কর্তৃক গৃহীত আগামী রোপন মৌসুমের জন্য গবেষণা কার্যক্রম এবং উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রযুক্তি উপস্থাপন করেন।

কর্মশালাটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কৃষিক্ষেত্রে অসামান্য সাফল্যের পথিকৃত জীবন্ত কীংবদন্তী প্রাক্তন আঞ্চলিক পরিচালক, আইএসএনএআর (এশিয়া এন্ড প্যাসিফিক) এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের প্রাক্তন নির্বাহী চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ড.মো.মতলুবর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সিস্টেম (বাউরেস) এর পরিচালক অধ্যাপক ড.লুতফুল হাসান,কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতের ক্রপস্ উইং এর পরিচালক মো. গোলাম মোস্তফা ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের শস্য বিভাগের সদস্য-পরিচালক ড. মো. আজিজ জ্বিলানী চৌধুরী। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন বিএসআরআই’র মহাপরিচালক ড. মু. খলিলুর রহমান। মহাপরিচালক মহোদয় বলেন বিএসআরআই কেবল আখ নিয়েই গবেষণা করে তা নয় বরং অন্যান্য চিনি জাতীয় ফসল যেমন সুগারবিট, তাল, খেজুর, স্টিভিয়া, গোলপাতা ইত্যাদি নিয়েও নিবিড় গবেষণা করে যাচ্ছে। সুগারবিট হতে পারে বাংলাদেশে চিনি উৎপাদনে আখের সাথে দ্বিতীয় সহযোগী ফসল যা থেকে বিদেশ থেকে আমাদের দেশে চিনি আমদানীর পরিমান কমিয়ে দিবে এবং বাংলাদেশ এ খাতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করবে-তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

     কর্মশালায় বিএসআরআই’র বিগত বছরের গবেষণালব্ধ ফলাফল ও প্রযুক্তিসমুহ এবং আগামী রোপন মৌসুমের জন্য গৃহীত গবেষণা কার্যক্রম প্রজেক্টরের মাধ্যমে পাওয়ার পয়েন্ট স্লাইডে উপস্থাপন করা হয় এবং তা নিয়ে আলোচনা পর্যালোচনা করা হয়। মাঠ পর্যায়ে কৃষকরা কিভাবে তা কাজে লাগিয়ে লাভবান হতে পারেন সে বিষয়েও বিশদভাবে আলোচনা করা হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের উর্ধ¦তন কর্মকর্তাগণ ও অধ্যাপকগণ আখ চাষে কৃষকারা কি কি সমস্যার মুখোমুখী হচ্ছেন এবং তা সমাধানে কি কি ধরনের পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে তা বি¯তারিত আলোচনা করেন এবং গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ প্রদান করেন।

কৃষি গবেষণা, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের কাজে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ দুই দিন ব্যাপী এই কর্মশালাটিতে একত্রিত হন এবং চিনি জাতীয় ফসল উৎপাদনে প্রতিষ্ঠানটির নিরলস পরিশ্রম ও সাফল্যগাথা দেখে সাধুবাদ জানান। তাদের আলোচনা ও পর্যালোচনার মাধ্যমেই উঠে আসে সময়পোযগী ও বাস্তবভিত্তিক গবেষণা কার্যক্রম। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক-গবেষণা ও পরিচালক-টিওটি জনাব মো. রফিকুল আলম কর্মশালাটিতে গবেষণা কার্যক্রমকে কিভাবে আরও ত্বরান্বিত ও বেগবান করা যায় সে বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।

প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিজ্ঞানীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে গবেষণার মাধ্যমে ইক্ষু চাষীদের লাগসই প্রযুক্তিসহ নতুন নতুন জাত উপহার দিয়ে আসছেন। বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট হতে গবেষণার মাধ্যমে ৪৪টি নতুন জাত উদ্ভাবন করা সম্ভব হয়েছে। যা বাংলাদেশের চিনি শিল্প ও গুড় শিল্পের চাকা সচল রাখতে উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রেখে চলেছে।

নিউজবাংলা/একে