নিউজবাংলা: ১৮ ডিসেম্বর, শুক্রবার:
ঢাকা: কৃষিপ্রধান দেশে কৃষকরা ধান চাষ করবে এটাই স্বাভাবিক। আর গবেষকরা এই ধান নিয়ে কতই না গবেষণা করছেন।
আর উদ্ভাবন করছেন নানান জাতের ধান। ইদানীং তো ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও আলাদা জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। কিন্তু ব্ল্যাক রাইস বা কালো চালের ধান বোধকরি প্রথম চাষ করেছেন ভারতের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কৃষক আশীষ হাজরা।
এই ধানের বিশেষত্ব কী? এমন প্রশ্ন সবার মনে আসতেই পারে। চিকিৎসরা তো এটাকে ক্যানসার প্রতিরোধক হিসেবে উল্লেখ করছেন। এছাড়া মানবদেহের বিভিন্ন রোগপ্রতিরোধ করবে এ ধানের চাল।
মহিষাদল ব্লকের ইটামগরা গ্রামের কৃষক আশিষ হাজরা এই ধান চাষ করে রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছেন। আর এটা এ অঞ্চলে আশীষ হাজরাই প্রথম চাষ করছেন তা স্বীকারও করেছেন ব্লক সহ-কৃষি কর্মকর্তা মৃণালকান্তি।
বেশি জমি নেই আশীষ হাজরার। সাত বিঘের মতো হবে। ব্লক কৃষিবিভাগ তাকে বর্ধমানের কৃষিমেলাতে পাঠালে তিনি সেখান থেকে এই কালো চালের ধানের বীজ সংগ্রহ করেন।
চিকিৎসকরা যে এটাকে ‘ঔষুধি ধান’ বলছেন তার কারণ হিসেবে সহ কৃষি কর্মকর্তা মৃণালকান্তি বলেন, ‘ব্ল্যাক রাইস বা কালো চাল মূলত চীনের বিভিন্ন এলাকায় চাষ করা হতো। আমরা জানি, কালো চাল ও নীল চাল সাধারণত মানুষ খায় না। কিন্তু, চীনে চাষ হলেও এই চাল সাধারণ মানুষ খেতে পারত না। একমাত্র সেখানকার রাজপরিবারের সদস্যরা খেতেন এই চাল। তাই এই চাল ‘নিষিদ্ধ চাল’ নামেও পরিচিত।’
এদিকে ‘ঔষুধী ধান’ বলে দাবিদার সেই চিকিৎসকরা জানান, ব্ল্যাক রাইস বা কালো চালের ক্যানসার প্রতিরোধের ক্ষমতা বেশি। পাশাপাশি ব্লাড সুগার, কিডনি ও নানা ধরনের রোগে কালো চাল খেলে উপকার হয়।
কালো চালের এই ধান যে চাষ করেছেন সেই আশীষ হাজরা বলেন, ‘সারা বছর নানা ধরনের উচ্চফলনশীল ধান চাষ করি। তবে কালো চাল চাষ করার ইচ্ছে ছিল দীর্ঘদিনের। কিন্তু, বীজধান পাচ্ছিলাম না। মহিষাদল কৃষি বিভাগ থেকে বর্ধমানের একটি অনুষ্ঠানে পাঠানো হয়েছিল। সেখান থেকেই কালো চালের বীজ ধান কিনে আনি। অন্য বীজধানের তুলনায় কম ফলন হলেও মোটামুটি হয়েছে। তবে আমি এই ধান বিক্রি করব না। নিজেরা খাব ও বীজধান তৈরি করব।’
কৃষক আশীষ হাজরার মতো এদেশেও চীনের রাজপরিবারের খাদ্য তালিকায় থাকা দামি এ ব্ল্যাক রাইস একদিন সাধারণ মানুষেরও পাতে উঠবে। আর তাই অন্য কৃষককে বীজধান দিতে চান হাজরা।
নিউজবাংলা/একে
Comments
comments