নিউজবাংলা – ২৬ সেপ্টেম্বর, শনিবার:
ফরিদপুর: ঈদ মানে আনন্দ, উৎসব। বিশ্ব মুসলমানের জন্য বছরে দুটি ঈদ। একটি পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং অন্যটি পবিত্র ঈদুল আজহা। দ্বিতীয়টি আমাদের দেশে কোরবানির ঈদ, বকরি ঈদ নামেও পরিচিত। ধনী-গরিব সকল মুসলমানের বাড়িতে কুরবানির শাশ্বত ত্যাগ ও আনন্দের ফল্গুধারা বয়ে যাবে।

 

এবারের পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে আকর্ষণীয় সাজসজ্জায় সজ্জিত হয়েছে ফরিদপুর পৌরসভার ‘শেখ রাসেল শিশু পার্ক’। প্রতিটি উৎসবের মতো এবারও এর ব্যত্যয় ঘটেনি।

ফরিদপুর পৌর শেখ রাসেল শিশু পার্কের মহাব্যবস্থাপক এম এ হালিম জানান, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে পার্কটি। উৎসবের তৃতীয় দিনে পার্কে বিশেষ আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি জানান, বিকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে দেশের নামি-দামি শিল্পিরা সংগীত পরিবেশন করবেন।

মহাব্যবস্থাপক আরও বলেন, ঈদ উপলক্ষে পার্কে আসা শিশু-কিশোরদের জন্য একশ টাকার প্যাকেজ চালু করা হয়েছে। এই প্যাকেজে এন্ট্রি ফিসহ দুইটি রাইডে চড়া যাবে।

পার্ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ৩০ থেকে ৩২টি রাইড রয়েছে এই শেখ রাসেল শিশু পার্কে। এর মধ্যে চলন্ত ট্রেন, ভূতুরে গুহা, ওয়ান্ডার হুইল, সুইং কেয়ার, প্যারাট্যুপার উল্লেখযোগ্য।

ফরিদপুর সদর আসনের এমপি এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ব্যক্তিগত উদ্যোগে শিশু-কিশোরদের চিত্ত বিনোদনের জন্য ২০১৪ সালে এটি নির্মাণ করা হয়। শহরের গোয়ালচামট এলাকায় মোট ১৪ একর জায়গার ওপর নির্মিত পার্কটি। পার্কটির নির্মাণ ব্যয় ২৫ কোটি টাকার বেশি।

শহরের আলীপুর এলাকার আনোয়ার হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ফরিদপুরে শিশুদের নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর মতো ভালো স্থান ছিল না। কিন্তু, শেখ রাসেল শিশু পার্কটি নির্মাণ হওয়ায় এখন আমরা প্রতিটি উৎসবেই পরিবারের সব সদস্যদের নিয়ে সেখানে ঘুরতে যেতে পারি।

সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের শিক্ষার্থী পিংকা মৃধা বলেন, শেখ রাসেল শিশু পার্ক শুধু শিশুদের জন্য তৈরি হয়নি। এখানে সব বয়সী মানুষের আনন্দ ভাগা-ভাগির উৎকৃষ্ট স্থান হয়েছে।

তিনি জানান, এক্ষেত্রে স্থানীয় এমপি ও মন্ত্রী মোশাররফ সাহেবকে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত।

ফরিদপুর সাহিত্য ও সংস্কৃতিক উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবুল ফয়েজ মো. শাহ নেওয়াজ বলেন, শিশুদের সুস্থ মানসিক বিকাশ ঘটাতে না পারলে সুন্দর জাতি পাওয়া কঠিন।

তিনি বলেন, পারিবারিকভাবেই প্রতিটি শিশুকেই স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্য সুস্থ মানসিক বিকাশ ঘটানো দরকার। শুধু টেলিভিশনের পর্দার সামনে শিশুরা বসলেই তার বিকাশ হয় না, এর জন্য প্রয়োজন শিশু পার্কসহ শিশুদের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা।

ফরিদপুর সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর হাসিনা বানু শিশুদের আনন্দের জন্য শিশু পার্কের বিকল্প নেই উল্লেখ করে বলেন, মফস্বলের শিশু কিশোররা টেলিভিশনের পর্দায় দিন রাত বসে থাকে, এতে তারা প্রকৃত আনন্দ পেতে পারে না।

প্রকৃত আনন্দ পেতে হলে অবশ্যই ভালোমানের পর্যটন স্থান বা শিশুদের পার্কগুলোতে যেতে হবে। আর এতে করে একটি শিশুর মানসিক বিকাশ দ্রুত ঘটবে।

তিনি বলেন, ফরিদপুরের শেখ রাসেল শিশু পার্ক স্থাপনের মধ্য দিয়ে জেলার সকল শ্রেণির শিশু কিশোরদের আনন্দের ভুবন তৈরি করা হয়েছে।

নিউজবাংলা/একে