পাপন -দুর্জয়ের তপ্ত সম্পর্ক শীতল হওয়ার ইঙ্গিত
নিউজবাংলা: ৮ অক্টোবর, বৃহ.বার:
ঢাকা: শঙ্কা ছিল, কেউ ‘বোল্ড’ করতে পারেন, অথবা নিজে থেকে কেউ ‘বোল্ড’ হতে পারেন। কিন্তু বোর্ড সভা শেষে দুজনই বলছেন, সমস্যা ‘লেটকাট’ করেছেন তারা।
ছয় মাস পর অনুষ্ঠিত বিসিবির গতকালের সভায় বেশ কিছু ঝামেলার সঙ্গে অনেকেরই দৃষ্টি ছিল দুর্জয়-পাপন বিরোধের দিকে। শঙ্কা ছিল, দুই পক্ষের দিক থেকে ‘কঠিন কোনো সিদ্ধান্ত’ আসার। তবে সভা শেষে দুজনই দাবি করছেন, ‘দূরত্ব কমেছে’।
বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরে বনিবনা হচ্ছিল না বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের। পাপন প্রকাশ্যে দুর্জয়ের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। এমন পরিস্থিতির পর দুজনের গতকালই প্রথম আনুষ্ঠানিক দেখা হয়।
সূত্র বলছে, বিসিবির কয়েকজন কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে মূল সভা শুরু হওয়ার আগে দুর্জয়ের সঙ্গে ‘একান্তে’ কথা বলেন পাপন।
‘আরে ওর সঙ্গে তো আমার কোনো সমস্যাই নেই। প্রতিদিন কথা হয়।’ তপ্ত সম্পর্ক শীতল হওয়ার ইঙ্গিত দেন পাপন।
দুর্জয়-পাপন বিরোধ বেশি সামনে এসেছে মূলত ‘এ’ দলের ভারত সফর ঘিরে। ওই সফরের আগে দুর্জয়ের বেশ কিছু সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করেন বোর্ড সভাপতি। তাও দুর্জয়কে না জানিয়ে। দুর্জয় চেয়েছিলেন, দলের সঙ্গে কোচ হিসেবে ভারতে যাবেন সারোয়ার ইমরান আর ম্যানেজার হবেন হাবিবুল বাশার। কিন্তু নাজমুল ‘হঠাৎ’ সিদ্ধান্ত নেন হিথ স্ট্রিক এবং ফারুখ আহমদেকে ভারতে পাঠানোর।
একইভাবে ‘এ’ দলের দক্ষিণ আফ্রিকা এবং জিম্বাবুয়ে সফরের জন্য দুর্জয়ের নেওয়া সিদ্ধান্তকে অগ্রাহ্য করেছেন বোর্ড সভাপতি। এই সফরে কোচ-ম্যানেজার হিসেবে ইমরান এবং মিনহাজুল আবেদিনকে দলের সঙ্গে পাঠানোর প্রস্তাব করেছিলেন দুর্জয়। কিন্তু সভাপতি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ফিল্ডিং কোচ রিচার্ড হালসাল এবং হাবিবুল বাশার দলের সঙ্গে থাকবেন। দুর্জয়ের জন্য বিব্রতকর বিষয়ের এখানেই শেষ নয়। কোচের কাজ করার কথা তার সঙ্গে পরামর্শ করে। কিন্তু হাথুরুসিংহ দুর্জয়কে ‘থোড়াই কেয়ার’ করেন। এর মূল কারণ হাথুরুসিংহকে সভাপতির ‘অকুণ্ঠ সমর্থন’। কিছুদিন আগে দুর্জয় নিজেই ‘অস্বস্তির’ কথা বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলেছেন। একইভাবে পাপনও জানিয়ে দিয়েছেন, দুর্জয়কে নিয়ে তিনি ‘সন্তুষ্ট নন’।
তবে গতকাল বিসিবিতে বসে দুর্জয় বললেন, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ভুলবোঝাবুঝির অবসান হয়েছে, ‘আমি শুধু তাকে (পাপনকে) বলেছি যদি কিছু হয় তো সরাসরি আমার কাছে বলতে। আশা করি এবার থেকে সব ভুলবোঝাবুঝির অবসান হবে।’
সূত্রের খবর, বেশ কয়েকজন ‘গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’র হস্তক্ষেপে পাপন আলাদাভাবে দুর্জয়ের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হন। গুরত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মধ্যে বিসিবি কর্তারা তো ছিলেনই, বাইরেরও কয়েকজন পাপন-দুর্জয়কে বিষয়টি মিটমাট করে নিতে অনুরোধ করেন।
পাপন-দুর্জয় দূরত্ব কমার ইঙ্গিত দিলেও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কেননা গতকাল মূল সভা শেষ হওয়ার আগেই রুম ছেড়ে বেরিয়ে আসেন দুর্জয়। ছিলেন না সংবাদ সম্মেলনেও। এই ঘটনার পর আবার গুঞ্জণ শুরু হয়েছে, তাহলে ক্রিকেট ঘিরে শাসক দলের দুই সাংসদের তপ্ত সম্পর্ক কি শীতল হওয়ার নয়?
উত্তর পেতে আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
নিউজবাংলা/একে