নগরকান্দায় ভুঁয়া পশু ডাক্তারদের দাপটে প্রাণী সম্পদ হুমকির মুখে
নিউজবাংলা: ১৬ আগস্ট, রোববার:
মিজান বাবু, নগরকান্দা(ফরিদপুর)প্রতিনিধি:
প্রাণী সম্পদ এর চিকিৎসা করার কোন যথাযত প্রশিক্ষণ ও বৈধ সনদপত্র নেই, তার পরেও এরা পশু ডাক্তার।
মোটরসাইকেলে ব্যাগ ঝুলিয়ে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলায় গ্রামের পর গ্রাম চোষে বেড়ান এসব ডাক্তাররা। বাড়ি বাড়ি গিয়ে গরু-ছাগলের চিকিৎসা করেন। সাথে সব সময় প্রয়োজনীয় ওষুধ রাখেন। প্রতিদিন মোটা অংকের টাকা আয় করেন। তবে এদের চিকিৎসায় মূল্যবান গরু-ছাগল সুস্থ্য না হয়ে আরো অসুস্থ্য হচ্ছে কিনা কেউই বলতে পারেনা। কারন পশুরা বোবা, তাই এদের ভুল চিকিৎসা দিলেও প্রতিবাদ করতে পারেনা। এ সুযোগে যেমন-তেমন ভাবে চিকিৎসা সেবা দিয়ে এবং ওষুধ বিক্রি করে ভুঁয়া ডাক্তাররা আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হচ্ছেন। তথা-কথিত এসব পশু ডাক্তারদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও রয়েছে নানান প্রশ্ন। তার পরেও থেমে নেই ভুঁয়া পশু ডাক্তারদের অবাধ দাপট, অবিরাম পথ-চলা।
জানা গেছে, ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার প্রায় সবখানেই রয়েছে এ সকল ভুঁয়া ডাক্তারদের কর্মকান্ড। নগরকান্দা উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসে চাহিদার তুলনায় জন-বল কম থাকায় এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের আন্তরিকতার অভাবে অনেকটা বাধ্য হয়েই ভুঁয়া ডাক্তারদের কাছে ছুটে যায় এলাকাবাসি। ভূঁয়া ডাক্তাদের কোন প্রশিক্ষণ না থাকায় অনেক সময় ভুল চিকিৎসায় গরু-ছাগলের মৃত্যু হচ্ছে। নগরকান্দা এলাকার মানুষেরা কৃষি নির্ভল হওয়ায় এ এলাকায় প্রচুর গরু-ছাগল পালন করা হয়। প্রাণী সম্পদের স্বাস্থ্য সেবার প্রয়োজনে নগরকান্দা উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসে যে সংখ্যক ডাক্তার ও যে পরিমান ওষুধ দেয়া হয়েছে, তা এলাকার চাহিদার তুলনায় খুবই কম। এ অবস্থায় এলাকার মানুষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রকৃত ডাক্তার না পেয়ে অজ্ঞতাবসত ভুঁয়া ডাক্তারের ফাঁদে পা দিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন। প্রতিনিয়ত ভুল চিকিৎসায় প্রাণী সম্পদের স্বাস্থ্য ও জীবন হুমকির মুখে পড়ছে বলে সচেতন মহল মনে করেন।
এলাকার ভুক্তভোগিরা জানান, সরকার যদি পশু চিকিৎসার জন্য ভেটেরিনারি বিভাগে প্রশিক্ষণ দিয়ে পল্লী পশু চিকিৎসক তৈরী করতেন এবং ভুয়া ডাক্তারদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিতেন, তাহলে গরু-ছাগল চিকিৎসার নামে কেউ প্রতারিত হয়ে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হতেন না।
নগরকান্দা উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও ভেটেরিনারি সার্জন মোঃ আজিজুল হক বলেন, “নগরকান্দা ও সালথা উপজেলার প্রাণী সম্পদের স্বাস্থ্য সেবায় মাত্র একজন ডাক্তার। চাহিদার তুলনায় সরকারি ওষুধ সরবরাহ খুবই কম। এ কারনে সকলের দোড় গোড়ায় সেবা পৌছানো সম্ভব হয়না। আর এ সুযোগে কেউ কেউ পশু ডাক্তার সেজে গ্রামে গিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছে। তবে আমাদের সামর্থ অনুপাতে যথা-সম্ভব চেষ্টা করছি যতটা সম্ভব ভাল সেবা দিতে।”
নিউজবাংলা/একে