রৌমারীতে স্থানীয় সরকার সহায়তা অর্থ ও সকল প্রকল্প হরিলুটের অভিযোগ
নিউজবাংলা: ০৯ সেপ্টেম্বর, বুধবার:
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ১নং দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরের এলজিএসপি-২ প্রকল্প আত্বসাৎ করেছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল গণী। দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের একাধিক অভিযোগ ও অনিয়ম দূর্নীতি করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
তিনি মেম্বার থেকে টাকার বিনিময় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দায়িত্বে পান। কিন্তু দায়িত্ব গ্রহন করার পর থেকে একাধারে তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগের প্রমান দাখিল করেন ভুক্তোভোগীরা। প্রকল্প হলো স্বা¯থ্য ,যোগাযোগ, শিক্ষা এগুলো একেবারে কোন কাজ করেনি। যেমন ইটালুকান্দা বাংলাবাজারে লেট্রিন নির্মান ও নলকূপ স্থাপন টাকার পরিমান ১.২০০০০,আমবাড়ী গ্রামে চান্দুল্লার বাড়ী সংলগ্ন রাস্তায় ইউ ড্রেন নির্মান টাকার পরিমান ১,২০০০০,চর ধনতোলা সরকারী প্রাঃ বিদ্যালয়ে গাইড ওয়াল নির্মান টাকার পরিমান ১,০০০০, ৫ নং ওয়ার্ডে দু:স্থ্য জনগনের মাঝে নলকুপ বিতরণও স্থাপন টাকার পরিমান ১,২০০০০, ৫ নং ওয়ার্ডে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসবাব পত্র সরবরাহ টাকার পরিমান ১৫৯৪৪৩, ৬ নং ওয়ার্ডে সেনিটেশন টাকার পরিমান ১,০০০০০, তেকানি গ্রামের আনোয়ার হোসেনের জমি সংলগ্ন রাস্তায় ইউ ড্রেন নির্মান টাকার পরিমান ১,২০০০০, দাঁতভাঙ্গা সরকারি প্রাঃ বিদ্যালয় রাস্তা ওয়াল নির্মান টাকার পরিমান ১,০০০০০, ৬ নং ওয়ার্ডে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসবাব পত্র সরবরাহ টাকার পরিমান ১,২০০০০। এরপর টি,আর (১) প্রকল্পের নামঃ ইটালুকান্দা আফজাল এর বাড়ী হইতে ইটালুকান্দা স্কুল পর্যন্ত রাস্তা মেরামত, বরাদ্ধেও পরিমানঃ ৫০,০০০ উত্তোলনরত টাকা ২৫,০০০ মনটু মেম্বারের ওয়ার্ড-১। (২) প্রকল্পের নাম: বালুর গ্রাম কবর স্থানের গেট নির্মান, বরাদ্ধের পরিমান: ৬৫,০০০ উত্তোলনকৃত টাকা: ৪০,০০০(চেয়ারম্যান ওয়ার্ড-৫)। (৩) প্রকলেপর নাম: ঝগড়ার চর জয়নাল মুন্সীর বাড়ী অলিউল্যার বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা মেরামত, বরাদ্দের পরিমান: ৫০,০০০ ও উত্তোলনকৃত টাকা ২৫,০০০ ( শের আলী মেম্বার ওয়ার্ড-৮)। (৪) প্রকলেপর নাম: আমবাড়ী আবুল এর বাড়ী হইতে আজাদ এর বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা মেরামত, বরাদ্দের পরিমান: ২৫,০০০ ও উত্তোলনকৃত টাকা:২৫,০০০(নুর ইসলাম মেম্বার ওয়াড-র্৪। (৫) প্রকলেপর নাম: দাঁতভাঙ্গা বাছের আলী বাড়ী হইতে ছফিয়াল হক এর বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা মেরামত, বরাদ্দের পরিমান ৫০,০০০ও উত্তোলন টাকার ২৫,০০০ ( ছাকেরা মেম্বার ওয়ার্ড-৭)। মোট বরাদ্দ টাকা: ২,৪০,০০০
মোট উত্তোলনকৃত টাকা: ১,৪০,০০০- মোট অবশিষ্ট: ১,০০০০০। তারপর কাবিখা মোট বরাদ্দ: ৩০ টন (১) প্রকল্পের নাম: পাড়ের চর মসজিদ হইতে নদী পর্যন্ত রাস্তা মেরামত। (২) প্রকল্পের নাম: ডিগ্রীর চর হাইবরের বাড়ী হইতে শামুর জমি পর্যন্ত রাস্তা মেরামত। স্থানীয় সরকারব্যবস্থা শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে গ্রামীন অবকাঠামো নির্মানে বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তা মন্ত্রণালয় থেকে এ বরাদ্দ আসে। বিধি অনুযায়ী মাইকিং করে বা ঢোল পিটিয়ে সভা আগমন করে ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠনের মাধ্যমে জনসাধারণের মতামতের ভিত্তিতে প্রকল্পের কাজ গ্রহন করার কথা, কিন্তু তা করা হয়নি। এমন এলজিএসপি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির কোন সভাও হয়নি।সূত্রমতে, কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করে ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিবেরা নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী প্রকল্প তালিকা তৈরি করেছেন। অনুগত সদস্যদের প্রকল্প কমিটির সভাপতি বানিয়ে কাজ করে আংশিক করে টাকা আত্বসাৎ করেছেন। আত্বসাৎতের বিষয় ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশস্কায় এসব তালিকা তাঁরা সাংবাদিকদের দিচ্ছেন না। সংশ্লিষ্ট সূত্রের ভাষ্যমতে, ওই প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নায়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে সরাসরি ইউনিয়ন পরিষদের ব্যাংক হিসাবে পাঠোনা হয়। ইউনিয়ন পরিষদের ব্যাংক হিসাব থেকে প্রকল্পের টাকা তুলে আত্বসাৎ করেছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল গনী। কিন্তু কাগজে-কলমে প্রকল্পের শতভাগ বাস্তবায়ন দেখানো হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়,২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরে উপজেলা ১ নং দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদে এলজিএসপি-২ ও টি,আর ও কাবিখা প্রকল্প জন্য ২০ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এরই মধ্যে ইউপি চেয়ারম্যান কেউ কেউ নিজ পরিষদের সদস্যের বিরুদ্ধে ও কোন কোন সদস্য চেয়ারম্যান বিরুদ্ধে টাকা আতœসাতের অভিযোগ ইউএনও বরাবর সাক্ষরকলিপি প্রদান করেন। প্রকল্পের তালিকা প্রদানের ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউপি সচিব বলেন,“র্উ্রধ্বতন র্কমর্কতাদের সঙ্গে আলাপ না করে কাউকে কিছু বলা যাবে না”। দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল গনী এলজিএসপি প্রকল্পে কোন অনিয়ম হয়নি। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যসচিব ও উপজেলা প্রকৌশলী বলেন “আমি মাস দেড়েক আগে এখানে এসেছি। তাই প্রকল্প সর্ম্পকে তেমন কিছু বলতে পারছি না। বাস্তবায়ন কমিটির সভা না করেই চেয়ারম্যান প্রকল্পের তালিকা প্রণয়ন করেছেন দাবি করে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত ইউএনও শংকর কুমার বিশ্বাস বলেন, “প্রকল্পের অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সরাসরি ইউপির ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হয়ে থাকে। চেয়ারম্যান প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আর ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে থাকেন। অনিয়মের অভিযোগ পেলে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বঙ্গবাসী বলেন, “এ ব্যাপারে অভিযোগ আমার কাছে আছে। অভিযোগগুলো তদন্তের জন্য কোনো সরকারী র্কমর্কতাকে দায়িত্ব দিলে তাঁরা দুর্নীতি রোধের চেয়ে চেয়ারম্যান-সদস্যদের দুর্নীতি করার কাজে সহযোগিতা করেন। তাই আমার কিছু করার নেই। তবে স্থানীয় সাংসদ চাইলে ওই দুর্নীতি রোধ করতে পারবেন। প্রকল্প যথাযথভাবে বাস্তবায়িত না হলে ও টাকা আত্বসাৎ করা হয়ে থাকলে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ রুহুল আমিন।
নিউজবাংলা/একে