নিউজবাং লা: ১৮আগস্ট, মঙ্গলবার:

এম এ আই সজিব,হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:

আজ ১৮ই আগষ্ট মাকালকান্দি গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালে এদিনে পাক হানাদাররা স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগীতায় শতাধিক নারী-পুরুষকে হত্যা করে। নরপশুদের ভয়াল থাবা থেকে বাদ যায়নি কোমলমতি শিশু।

 

 

ফিরে দেখা- ৭১’ এর ১৮ আগস্ট- ওই দিন ভোরে অর্ধশতাধিক নৌকা নিয়ে মাকালকান্দির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় পাক হানাদার বাহিনী। বানিয়াচং থেকে স্থানীয় রাজাকাররা তাদের সাথে যোগ দেয়। সকাল ৮টায় ঘাতকরা পৌছায় দূর্গম মাকালকান্দি গ্রামে। তখন গ্রামবাসী চন্ডি মন্দিরে মনসা পুজায় ব্যস্ত ছিলেন। কোন কিছু বুঝার আগেই পূজায় মগ্ন নিরীহ নর-নারীদের উপর ঝাপিয়ে পরে নরপশুর দল। চালানো হয় মুহুর্মুহু গুলি। শুধু তাই নয়, কাতার করে নিরীহ গ্রামবাসীর উপর করা হয় ব্রাশফায়ার। হানাদারদের আক্রমনে কেঁদে উঠে আকাশ-বাতাস। কাতারে কাতারে দাঁড় করিয়ে শতাধিক নারী পুরুষকে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। তবে এদের মধ্যে ৭৮ জনের নাম পরিচয় পাওয়া যায়। নরপশুরা মিনতী রানী পাল নামের এক পূজারীর কোল থেকে তার ৩ বছরের শিশু সন্তানকে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেয়। রাজাকারদের সহযোগীতায় হানাদাররা সেদিন চালায় ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যা। যারা নৌকা দিয়ে পালাতে পেরেছিলেন তারা বেঁচে যান। কেউ কেউ ঝোপ-ঝাড়ের আড়ালে লুকিয়ে থেকে প্রাণ রক্ষা করেন। হানাদাররা গণহত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, বাড়ি-ঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। এ সুযোগে স্থানীয় রাজাকাররা চালায় ব্যাপক লুটপাট।

ঐ গ্রামের হরিপদ চৌধুরী জানান, ওই দিন তার মা, বাবা, ভাই বোনসহ ৭ জনকে পৈশাচিকভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়।

কৃপেশ চৌধুরী গোপাল জানান, সেদিন তার বয়স ছিল ৫ বছর। নরপিশাচরা তার মা, বাবা, ভাই-বোনসহ পরিবারের ৯ সদস্যকে হত্যা করে। অনেকে আক্ষেপ করে জানান, স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরও শহীদ পরিবারকে মুক্তিযোদ্ধার পরিবার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি।

এ গ্রামের যুবক প্রদীপ দাশ জানান, ২০০৮ সালের ১৮ আগষ্ট তৎকালীন ইউএনও মোঃ নুরে আলম সিদ্দিকীর প্রচেষ্টায় গ্রামে স্থাপিত হয় একটি স্মৃতিসৌধ।

নিউজবাংলা/একে