নিউজবাংলা: ২৯আগষ্ট, শনিবার:

মো: শাবিব হোসেন, রাজশাহী প্রতিনিধি :

রাজশাহী নগরীর উপকণ্ঠ কাপাশিয়া গ্রামের সরদার পাড়ায় কয়েকজন যুবক মিলে তৈরী করেছেন ৭৮৫ বর্গফুটের বিশাল এক ডিজিটাল ঘড়ি। তাদের দাবি এই ডিজিটাল ঘড়িই বিশ্বের সবচেয়ে বড় ঘড়ি। শুক্রবার সন্ধ্যায় এই ঘড়িটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। রাতের বেলা এই ঘড়িটি থেকে সময় দেখা যাবে অন্তত ১০ কিলোমিটার দূর থেকে।

 

উদ্ভাবকদের দেওয়া তথ্য মতে, এই ঘড়িটির সংখ্যার উচ্চতা ১৭.৫ ফুট আর প্রস্থ ৪৪.৯ ফুট। প্রায় দু বছরের চেষ্টায় বিদ্যুৎ সফটওয়ার দিয়ে চালিত এই বিশাল ঘড়ি তৈরী হয়েছে ৪৮ টি রড বাল্ব, স্টিলের বডি আর বাঁশের ফ্রেম দিয়ে, খরচ হয়েছে আড়াই লক্ষ টাকা।ঘড়ি উদ্ভাবনের প্রধান উদ্যোক্তা আকুল হোসেন মিঠু জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকবাসীর সহযোগীতায় তারা ঘড়িটি নির্মাণ করেছেন। গ্রামে-গঞ্জে এমন প্রতিভার যেন মূল্যায়ন করা হয় সেই লক্ষেই ঘড়িটি নির্মাণ করা। এর জন্য কেউ দিয়েছেন বাঁশ, কেউ বিদ্যুতের তার, কেউ বাল্বসহ আনুসঙ্গিক জিনিসপত্র। আবার যারা কিছুই দিতে পারেনি, তারা দিয়েছেন শ্রম। ফলে সবার ঐকান্তিক পরিশ্রমের ফসল হিসেবেই এই ঘড়িটি তৈরী হয়েছে। মিঠু আরো জানান, ‘তার বাবা মনতাজ সরদার কাটাখালি পৌর সভার ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর। বাবার স্বপ্ন ছিল ছেলে মিঠু বড় ইঞ্জিনিয়ার হবে। কিন্তু মিঠু তা হতে পারেনি। রাজশাহী কলেজ থেকে বাংলায় অনার্স পড়েই থেমে যেতে হয়েছে তাকে। তবে তিনি হালও ছাড়েননি। অনেকদিন আগ থেকেই ইলেক্ট্রোনিক্সের কাজ করতে করতে অভিজ্ঞ হয়ে উঠেন মিঠু। সেই সঙ্গে তিন বছর আগে রাজশাহী থ্রি ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডে ১৫ দিনের মাইক্রো কন্ট্রলার বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেন মিঠু। এছাড়াও বিভিন্ন বইপত্র ঘেঁটে এবং ইন্টারনেট থেকে সাহায্য নিয়ে বছর দুয়েক আগে হাত দেন ডিজিটাল ঘড়ি নির্মাণকাজে। এলাকার আরো কয়েকজন যুবক ও স্থানীয়দের নিয়ে শুরু করেন এ কাজ। সেই থেকে এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় ঘড়িটির নির্মাণকাজ শেষ করেন মিঠু। এর পর সেই ঘড়িটির শুক্রবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনও করেন তারা। মিঠুর এ কাজে আরো যারা সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করেন, তারা হলেন সোহেল, রাজন, শামসুল, সেলিম, মোস্তাফিজুর রহমান, মুন্না, ফজলুল হক, মারুফ, শাহীন প্রমুখ। মিঠু আরো জানান, ‘তাদের এই ঘড়িটি রাতের বেলা অন্তত ১০ কিলোমিটার দূর থেকে দেখা যাবে। আর দিনের বেলা দেখা যাবে কাছ থেকে। তবে ঘড়িটিতে এলইডি বাল্ব সংযোজন করতে পারলে দিনের বেলাতেও দূর থেকে সময় দেখা যাবে। এদিকে কাপাশিয়া সরদার পাড়া গ্রামে ঘড়িটি উদ্বোধনের পর দূর-দূরান্ত থেকে নানা বয়সের মানুষ ঘড়িটি দেখতে ছুটে যান। সকলের দাবি এই ঘড়িটিকে যেন গিনেজ বুকে ঠাঁই দেয়া হয়। শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে ঘড়িটির উদ্বোধন করেন প্রধান উদ্ভাবক মিঠুর বাবা মনতাজ সরদার । মিঠুকে সহায়তাকারী ফজলুল হক তার নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘আমরা খুব আনন্দিত। এই ধরনের কাজ করতে পেরে নিজেরা গর্বিত। তবে এর জন্যই মিঠুর অবদানই বেশি।’

নিউজবাংলা/একে