নিউজবাংলা: ১৫ আগস্ট, শনিবার:

কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচিতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী ও বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা মোমিনুর রহমান মোমিজের ক্যাডারদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।

এতে সবুজ হোসেন (৩৫) নামে এক যুবলীগ কর্মী নিহত ও কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে শহরের মজমপুর গেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, বেলা ১২টার দিকে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শহরে শোক র‌্যালী বের করে জেলা আওয়ামী লীগের একাংশ। র‌্যালীতে অংশ নেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তারা র‌্যালী শেষে মজমপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মজমপুর গেটে সমবেত হন। এসময় যৌন কেলেঙ্কারীর দায়ে দল থেকে বহিষ্কৃত কুষ্টিয়া শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিজের নেতৃত্বে তার ক্যাডাররা অতর্কিত হামলা চালায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মোমিজের ঘনিষ্ট সহযোগী টুটুল পুলিশের সামনেই প্রকাশ্যে উস্ত্র উঁচিয়ে পরপর তিন রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে। এ ঘটনায় কমপক্ষে ১০ নেতাকর্মী আহত হন। পরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীরা একজোট হয়ে মোমিজের ক্যাডারদের ধাওয়া করলে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে মোমিজের সহযোগী সবুজ ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হন। তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর মারা যান। মোমিজের সমর্থকরা সেচ্ছাসেবক লীগের কর্মী আজমুল হোসেন নামের এক কর্মীকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। দুপুরের পর আজমলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া মোমিজের সমর্থকরা শহর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মীর রেজাউল ইসলাম বাবুকে একটি বাড়িতে আটকে রাখে। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে। এদিকে সবুজ নিহতের ঘটনায় আহত স্বেচ্ছাসেক লীগ কর্মী আজমুলের ঢাকাঝালুপাড়া গ্রামের বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে।

সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ সাজ্জাদ হোসেন সবুজ জানান, মোমিজ ও তার ক্যাডাররা পরিকল্পিতভাবে শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা ও গুলি করেছে। কুপিয়ে আমার দলের এক কর্মীর হাত কেটে নিয়েছে। আহত হয়েছে আরো কয়েকজন।

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে মোমিজের ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার প্রলয় চিসিম জানান, দুইপক্ষের সংর্ঘর্ষে একজন মারা গেছেন। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী জানান, কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় শহরে তুমুল উত্তেজনা বিরাজ করছে।

সেচ্ছাসেবক ও ছাত্রলীগের দুই নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মোমিজ কয়েকদিন আগে পর্ণগ্রাফির মামলায় খালাস পেয়েছে। এরপর থেকে সে বিভিন্ন এলাকায় মহড়া দিচ্ছে। জেলা আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতা তাকে নানাভাবে সহযোগিতা দিয়ে আসছে। এ ঘটনায় সবাই ক্ষুদ্ধ।

 

নিউজবাংলা/একে