গাইবান্ধায় বাড়ছে পানি, ছাড়ছে বাড়ি
নিউজবাংলা: ০৫ সেপ্টেম্বর, শনিবার:
তোফায়েল হোসেন জাকির, গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
নদ-নদীর পানি অব্যাহত ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় গাইবান্ধা জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি আবারও মারাত্মক অবনতি হয়েছে। এর ফলে পানি বন্দি পরিবারগুলো বাড়ি ছেড়ে জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও আত্মীয় স্বজনের বাড়ীতে আশ্রয় নিচ্ছে। সেই সাথে বানভাসি মানুষদের জনজীবন বিপর্ষস্ত হয়ে পড়েছে।
বিশেষ করে ছিন্নমুল পরিবারের গৃহপালিত পশুপাখি নিয়ে পড়েছে বিপাকে। তাদের কষ্টাজিত সহায় সম্বল হারিয়ে যেতে বসেছে। তৃতীয় বারের বন্যার কারণে সম্প্রতি কিছু সংখ্যক পরিবার ভেলা সেজে পানির উপর বসবাস করছে।
শনিবার সকাল পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্রের পানি ১২ সে.মি. বৃদ্ধি পেয়ে এখন বিপদসীমার ৪৮ সে.মি. এবং ঘাঘট নদীর পানি ১ সে.মি. বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৫৬ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে করতোয়ার পানি ২০ সে.মি. ও তিস্তার পানি ২৪ সে. মি. বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিশেষ করে গত এক দশক ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ড বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো সংস্কার না করায় ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে পানি ভেতরে ঢুকে পড়ায় গোটা জেলায় এই বন্যায় নতুন নতুন এলাকা জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে দু’সপ্তাহের এই অব্যাহত বন্যায় জনদূর্ভোগের পাশাপাশি ব্যাপক ফসলহানিও হয়েছে।
এদিকে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার ৭টি উপজেলার ৮২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬২টি ইউনিয়নের ৩শ’ ৬৭টি গ্রামের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার ২ লাখ ৭০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার, টয়লেট সমস্যা, গো-খাদ্য সংকটসহ নানা দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। সেই সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থাও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
সরকারি ভাবে ত্রান বরাদ্দ অপ্রতুলতার কারণে নিম্ন আয়ের মানুষদের এখন অসহায় অবস্থা। দু-একটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া বে-সরকারি কোন সংস্থাই এখন পর্যন্ত দূর্গতদের পাশে এসে দাঁড়ায়নি। বন্যায় জেলার প্রায় ৫৫ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন, বীজতলা, শাক-সবজি, আদা ও কলার ক্ষেত বিনষ্ট হয়েছে।
ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট, তিস্তা ও করতোয়া নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ এবারের এই বন্যার ফসলের ক্ষয়ক্ষতির কারণে খাদ্যে উদ্বৃত্ত গাইবান্ধা জেলার মানুষকে খাদ্য ঘাটতির মোকাবেলা করতে হবে বলে আশংকা করছেন।
নিউজবাংলা/একে