নিউজবাং লা: ১৯আগস্ট, বুধবার:

সাদ্দাম হোসেন, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:

দিনমুজুর তমিজ উদ্দিন। বয়স ৪০ বছর। জীবিকার তাগিদে ঢাকার সায়দাবাদের একটি কাঠের মিলে কাজ করতেন। প্রতিদিনের মতো সেদিনও কাজে যাওয়ার জন্য বাসে উঠেছিলেন। কিন্তু সেদিন ছিল বিএনপি’র অবরোধ। বাসে হঠাৎ করেই টিকাটোলি নামক স্থানে দূবৃর্ত্তদের ছোঁড়া পেট্রোল বোমার বিস্ফোরণে তাঁর শরীরে আগুন লেগে যায়।

আশেপাশে কয়েকজনের শরীরেও আগুন জ্বলতে দেখে সে। এরপর তড়িঘড়ি করে নামার সময় পিঠে ধাঁরালো দা দিয়ে জখম করে দূবৃর্ত্তরা। এরপর ঘটনাস্থলেই অজ্ঞান হয়ে যায় সে। আশেপাশের লোকজন আহত অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে অভিভাবক না থাকায় ভর্তি নেয়নি সেখানকার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক। সেইদিন তমিজের আগুনে পোঁড়া শরীর আর পিঠে ক্ষত স্থানের জ্বালা-যন্ত্রণা বুঝেনি সেই দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক। অপরিচিত এক ব্যক্তি টিকেট কেটে বাড়ির উদ্দেশ্যে গাড়িতে উঠিয়ে দেয় আহত তমিজকে। পরে নিজ বাড়িতে আসলে পরিবারের লোকজন তাঁকে দিনাজপুর প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে দীর্ঘ ৬মাস চিকিৎসা করার পর বাড়িতে নিয়ে আসে। তাঁর বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামে। নিজের কোন জমি নেই, সরকারি জমিতেই বাড়ি করে পরিবারের ৮জন সদস্যের সাংসারিক খরচ তাঁকে চালাতে হয়। ২ ছেলে ও ১ মেয়ের লেখাপড়ার খরচও তাঁকে বহন করতে হয়। কিন্তু দারিদ্রের সংসারে আজ পেট্রোল বোমার আগুন জ্বালিয়ে দিচ্ছে তাঁর সংসার।চিকিৎসার সাহায্যের জন্য বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে আবেদনও করেছেন তমিজ কিন্তু তাতেও কেউ সাড়া দেইনি। বর্তমানেও তমিজকে প্রতিদিন ১৩২টাকার ঔষুধ খেতে হচ্ছে।বাম হাতের পিঠে জখম হওয়ায় সেই হাত দিয়েও ঠিকমত কাজ করতে পারছে না তমিজ।তবুও কষ্ট করে স্থানীয় কাঠের মিলে ২৫০টাকা দিনমুজুরিতে কাজ করে ৮সদস্যের সংসার চালাচ্ছে সে।তাঁর সাথে কথা বললে এসব কষ্টের কথা জানান তিনি। তিনি বলেন, একদিকে পরিবারের খরচ অন্যদিকে আমার সুস্থ হওয়ার জন্য ঔষুধের টাকা।মাঝে মাঝে পরিবারের খরচ করতে গিয়ে টাকা শেষ হলে ঔষুধ কেনা হয় না বলেও জানায় তমিজ। এভাবেই কষ্টের মধ্যে চলছে তাঁর জীবন সংগ্রাম।

নিউজবাংলা/একে