হবিগঞ্জে মানববন্ধনে হামলা: শিক্ষার্থী-সহ আহত অর্ধশতাধিক
নিউজবাংলা: ৩০ আগষ্ট, রবিবার:
এম এ আই সজিব,হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:
ছাত্রীদের যৌন হয়রানীর প্রতিবাদে মানববন্ধনে বখাটেদের হামলার ঘটনার জের ধরে স্কুল ছাত্রছাত্রী সহ দুই গ্রামবাসীর ২ ঘন্টা স্থায়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ছাত্রছাত্রীসহ অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছে।
সংঘর্ষ চলাকালে হাইস্কুলের অফিস কক্ষে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ম্যানেজিং কমিটির নেতৃৃবন্দ আটকা পড়েন। দুই ঘন্টা আটকে থাকার পর পুলিশের সহায়তায় তারা উদ্ধার হন। এ সময় হাইস্কুলে ব্যাপক ভাংচুর করা হয়। বাহুবল থানা পুলিশ সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ৪২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি নিক্ষেপ করেছে। আহতদের বাহুবল ও সিলেট হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাহুবল উপজেলার ফয়জাবাদ হাই স্কুলের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীদের নিয়মিত যৌন হয়রানী করে স্থানীয় পূর্ব ভাদেশ্বর প্রকাশিত পুকুরপাড় গ্রামের কতিপয় বখাটে।
এ বিষয়ে গত শনিবার বিদ্যালয়ে একটি সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও বিষয়টি সমাধান হয়নি।
এরই প্রেক্ষিতে রোববার সকাল ১১টার দিকে ফয়জাবাদ হাই স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা স্কুলের সামনে রাস্তায় মানববন্ধনের আয়োজন করে। মানববন্ধন চলাকালে হঠাৎ কওে একদল বখাটে ছাত্রছাত্রীদের উপর হামলা চালায়। এ অবস্থায় স্থানীয় সুন্দ্রাটিকি গ্রামের লোকজন মানববন্ধনকারীদের পক্ষে অবস্থান নেয়।
এতে সুন্দ্রাটিকি ও পূর্ব ভাদেশ্বর গ্রামবাসীর মাঝে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
সংঘর্ষস্থলে স্কুলের মাঠে হওয়ায় অফিসকক্ষে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ম্যানেজিং কমিটির নেতৃবৃন্দ্র অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। ২ ঘন্টা সংঘর্ষ চলাকালে স্কুলের অফিস কক্ষ সহ বিভিন্ন শ্রেণী কক্ষে ভাংচুর চালানো হয়। আটকে পড়া শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির উপর হামলার চেষ্টা চালানো হয়।
সংঘর্ষ চলাকালে বাহুবল উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল হাই, এএসপি (সার্কেল) সাজ্জাদ ইবনে রায়হান, ভাদেশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান মত্তাছির মিয়া সহ নেতৃবৃন্দ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালান। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে দুপুর দিকে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণের আনতে এবং অবরুদ্ধ শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ম্যানেজিং কমিটির নেতৃবৃন্দকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
সংঘর্ষে গুরুতর আহতদের মাঝে সুন্দ্রাটিকি গ্রামের প্রবাসী দোলন মিয়া (৩৫) কে সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতাল এবং ১০ম শ্রেণীর ছাত্র জাকির হোসেন, রুবেল, তফাজ্জুল, ইমাম, মুছাব্বির, রাশেল, আফজল, তুহিন, জায়েদ,- ৯ম শ্রেণীর হালিমা, লিজা, নূরুল হক, রহিম,- ৮ম শ্রেণীর ফরিদা, তানজিনা, কাওসার, জুয়েল, রাজু, আলমগীর,- ৭ম শ্রেণীর লুবনা, সুবর্ণা, হোসনা সহ বেশ কয়েকজনকে বাহুবল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোশাররফ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে পিপিএম বলেন, সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ৪২ রাউণ্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উভয়পক্ষে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় বড়ধরণের সংঘর্ষ বেঁধে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন রয়েছে ও স্থাণীয় নেতৃবৃন্দ ও অবস্থান করছেন।
নিউজবাংলা/একে