নিউজবাংলা- ১১সেপ্টেম্বর শুক্রবার:

বিশেষ প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল:

সাবেক ডাক ও টেলিযোগযোগ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী বলেছেন, আমি আর জনৈতিক ব্যক্তি নই। আওয়ামীলীগ থেকে আমাকে বহিঃস্কার করেছে। দলের এই সিদ্ধান্ত আমি মেনে নিয়েছি।

দলের এই সিদ্ধান্তকে আমি স্বাগত জানাই। টাঙ্গাইল- ৪ কালিহাতির শূণ্য আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামীলীগ ও শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দিবে আমি এবং আমার অনুসারিরা তার পক্ষেই কাজ করব। তার ভাই বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর উপনির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, আমার ভাই নেই, বাবা নেই, মা নেই, বোন নেই, জনগনই আমার সব। ব্যক্তি লতিফ সিদ্দিকীর অনেক কিছু আছে। কিন্তু রাজনৈতিক লতিফ সিদ্দিকীর জনগন ছাড়া কিছু নেই। আমি এখন ব্যক্তি লতিফ সিদ্দিকী হয়ে গেছি। কারণ দল আমাকে বহিঃস্কার করেছে। সুতরাং আমি আর রাজনৈতিক কোন ব্যক্তি নই, রাজনৈতিক কোন কথা বলব না।

গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে টাঙ্গাইল সমিতি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পবিত্র হজ ও তাবলিগ জামায়াত নিয়ে আপত্ত্বিকর বক্তব্য, কারাভোগ, বহিস্কার ও সাংসদ থেকে পদত্যাগের পর দীর্ঘ ১বছর পর শুক্রবার দুপুরে তার নিজ জেলা টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার আটিয়ায় হযরত শাহানশাহ আদম কাস্মিরীর মাজার জেয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সাথে তিনি এসব কথা বলেন।

গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে টাঙ্গাইল সমিতি আয়োজিত অনুষ্ঠানের বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রায় ৯০ মিনিটের দেয়া বক্তব্যের খন্ডিত, বিকৃত ও জোড়া দেয়া আড়াই মিনিটের বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে।

সাবেক এই মন্ত্রী মাজারে দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করেন। পরে তিনি আটিয়া জামে মসজিদে জুমআর নামাজ শেষে তার নিজ এলাকা কালিহাতীর দিকে রওনা হন।

এদিকে বহিঃস্কৃত সাবেক এই মন্ত্রীর পেছনে সরকারি বা প্রসাশনিক কোর প্রটোকল না থাকলেও কালিহাতী উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মোল্লা, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক নুরন্নবী সরকার, এলেঙ্গা পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি গোলামমোহাম্মদ খান,সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান, উজেলা আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক আব্দুস সালাম, কালিহাতীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ কয়েকশ নেতাকর্মী ও অনুসারীরা জয়বাংলা শ্লোগান দিয়ে তাকে স্বাগত জানান। তারা মন্ত্রীত্ব থাকার পরও এতো তৃনমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তার সাথে দেখা যায়নি। তবে দেলদুয়া উপজেলা আওয়ামীলীগ বা তার অঙ্গসংগঠনের কোন নেতাকর্মীকে এসম উপস্থিত থাকতে দেখা যায়নি।

গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে টাঙ্গাইল সমিতি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পবিত্র হজ ও তাবলিগ জামায়াত নিয়ে কটূক্তি করেন তখনকার ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী। পরে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন আদালতে মোট ২৭টি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে ১৭ মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরে সরকার মন্ত্রিসভা থেকে তাকে অপসারণ করে। আওয়ামী লীগও তাকে সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও প্রাথমিক সদস্যপদ ধেকে বহিষ্কার করে। গত বছরের ২৩ নভেম্বর রাতে ভারত হয়ে দেশে ফেরেন লতিফ সিদ্দিকী। ২৫ নভেম্বর ধানমন্ডি থানায় আত্মসমর্পণ করেন তিনি। পরে তাকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠিয়ে দেন। কারাগার থেকে বেড়িয়ে বেশ কিছু দিন আত্মগোপনে থাকার পর সম্প্রতি সাংসদ থেকে পদত্যাগ করেন।

 

নিউজবাংলা/একে