চট্টগ্রাম: বন্দরনগরী চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকায় চাঞ্চল্যকর মা মেয়ে হত্যাকাণ্ডের দুই আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মহিতুল হক এনাম চৌধুরী এই রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো আবু রায়হান প্রকাশ আরজু (২৪) এবং শহীদ (২৬)।
দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আইয়ুব খান দুই আসামির ফাঁসির আদেশ হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ চাঞ্চল্যকর এই মামলাটি সন্দেহাতিতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হওয়ায় আদালত আসামিদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের রায় ঘোষণা করে।
এ ছাড়া দুই আসামিকে একসঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ডেও দন্ডিত করা হয়। দন্ডিত দুই আসামি রায় ঘোষণার সময় আদালতে হাজির ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়।
জানা যায়, গত বছরের গত ২৪ মার্চ সকালে চট্টগ্রাম মহানগরীর ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকার ১৭ নম্বর সড়কে যমুনা ভবনের চতুর্থ তলায় সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীর স্ত্রী রেজিয়া বেগম (৫০) এবং তাদের মেয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী সায়মা নাজনীন নিশাতকে (১৬) ছুরিকাঘাত করে পরে পায়ের রগ কেটে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। প্রেমে ব্যর্থ হয়ে নিশাতের কথিত বন্ধু রায়হান প্রকাশ আরজু ও ভাড়াটে খুনি শহীদকে সঙ্গে নিয়ে এই হত্যাকা- সংগঠিত করে। এ ঘটনায় সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী মো. রেজাউল করিম বাদী হয়ে দুইজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
এই মামলায় ২৬ মার্চ ভোরে আরজুকে ঢাকার আরামবাগে একটি হোটেল থেকে এবং শহীদকে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানার মাস্টারলেন এলাকা থেকে গ্রেফতার করে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেফতারের পর উভয়ে ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
এই মামলায় একই বছরের মে দুই আসামির বিরুদ্ধে আদালতে আট পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। অভিযোগপত্রে ৩৭ জনকে সাক্ষী করা হয়। প্রেমে প্রত্যাখাত হয়ে প্রতিশোধ নিতে রায়হান প্রকাশ আরজু শহীদকে ভাড়া করে দুইজনে মিলে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
গত বছরের ৪ আগস্ট থেকে মামলার ৩৭ জন সাক্ষির মধ্যে ৩০ জন সাক্ষির সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার আদালত দুই আসামির বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় ঘোষণা করেন।