জেনে নিন, কোন খাবারে কি গুণ
নিউজবাংলা: ১৭ আগস্ট, সোমবার:
ঢাকা: বর্ষায় একটু মাথা কি পা ভিজলেই যদি সর্দি-কাশিতে কাবু হন, কি একটুতেই অন্যের রোগের ছোঁয়াজ লেগে যায়, তাহলে বুঝতে হবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেজায় কমেছে আপনার।
এ রকম পরিস্থিতিতে সমস্যার মূলে না গিয়ে ওষুধ খেয়ে খেয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলে, যতো দিন যাবে বিপদ আরও বাড়বে। সর্দি-কাশির মোটামুটি নিরীহ ব্যাকটেরিয়া-ভাইরাসের পথ ধরে জটিল থেকে জটিলতর জীবাণুরাও ঘায়েল করা শুরু করবে কথায় কথায়।-এইসময়।
অতএব আজ থেকেই কয়েকটি পদক্ষেপ নিন। শুরু করুন ব্যায়াম, নজর দিন স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতার দিকে, সুষম খাবার খান। তার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজে লাগে এমন কয়েকটি খাবার খান নিয়ম করে।
সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে সাধারণ সর্দি-জ্বর-কাশি-শ্বাসকষ্ট ইত্যাদিকে কম রাখতে এই সব খাবারের কোনও জুড়ি নেই। নিয়মিত খেলে বড় সংক্রমণও অনেকাংশে এড়ানো যায়।
পেয়ারা, আমলকি, কমলালেবু, পাতিলেবু বা সবেদার মধ্যে কোনও এক বা একাধিক ফল খান রোজ। এতে ভিটামিন সি আছে খুব বেশি মাত্রায়, প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে যা শরীরের কাজে লাগে নানানভাবে। রোদ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো যার মধ্যে অন্যতম। খান কুমড়ো, গাজর বা পাকা পেঁপে। বিটা ক্যারোটিনের প্রভাবে প্রতিরোধ শক্তি তরতাজা হয়ে উঠবে।
রসুন খেলে ভাইরাল ও ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন যেমন কম থাকবে, শরীরে প্রদাহ হওয়ার প্রবণতাও কমবে। কাঁচা খেতে পারলে ভালো। নাহলে রান্নায় মিশিয়ে খান। কিন্তু খান। খান কাঁচা হলুদ। রান্নায় হলুদ ব্যবহার করুন। গুঁড়ো হলুদের পরিবর্তে নিজে বেটে নিতে পারলে সবচেয়ে ভালো। টাটকা জিনিসটা পাবেন। হলুদে আছে ভিটামিন বি৬, পটাশিয়াম-ম্যাঙ্গানিজ-আয়রনের মতো উপকারি মিনারেল।
তার পাশাপাশি আছে কারকিউমিন নামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর প্রধান কারিগর। ঘরে পাতা টাটকা দইয়ের উপকার সম্বন্ধে কাউকে আর নতুন করে বলার কিছু নেই। কিন্তু সর্দি-কাশি এড়াতেও যে তার ভূমিকা আছে তা জানা গিয়েছে সম্প্রতি। নিয়মিত দই খেলে শরীরে ইন্টারফেরোন তৈরি হয়, তার প্রভাবে বাড়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
কাজেই আজ থেকেই খাওয়া শুরু করুন। এর সঙ্গে খান গোটা কয়েক আমন্ড। পর্যান্ত ভিটামিন ই-এর যোগানে সংক্রমণ ঠেকানোর শক্তি জোরদার হয়ে উঠবে। খেতে হবে গাঢ় সবুজ রংয়ের শাক-সবজি।
অন্যান্য উপাদানের পাশাপাশি এতে রয়েছে ফোলিক অ্যাসিড। ইমিউনিটি বাড়াতে যার ভূমিকা অনবদ্য। গ্রিন-টির অ্যান্টিঅক্সিডেন্টকে নিয়ে আজকাল প্রচুর হইচই হচ্ছে। এর উপকারিতা নিয়ে আর নতুন করে কিছু বলার নেই। তবে এর যে সর্দি-কাশি বা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসকে মেরে ফেলার ক্ষমতা আছে তা জানা গেল সম্প্রতি। কাজেই রোজ ২-৩ কাপ করে খান। এই একই কাজের জন্য চাই শরীরে পর্যান্ত জিঙ্কের যোগান। নিরামিশাসীরা যা পাবেন ব্রাউন রাইস, ব্রাউন ব্রেড, খোঁসাসমেত ডাল, বিনস, ফর্টিফায়েড সিরিয়াল ইত্যাদি থেকে। আমিষাশীদের কোনও অসুবিধে নেই। কারণ কাঁকড়া, রেডমিট, ঝিনুক ইত্যাদিতে জিঙ্ক আছে প্রচুর পরিমাণে।
সর্দি-কাশির ধাত থাকলে যা করবেন না:
নিয়মিত মদ খাবেন না। আইবুপ্রফেন জাতীয় ব্যথার ওষুধ ন-মাসে ছ-মাসে এক-আধবার খেতে পারেন। কিন্ত্ত নিয়মিত নয়। কিছু পেস্টিসাইডে লেড, মার্কারি বা ক্যাডমিয়াম থাকে। প্রতিরোধ ক্ষমতা তলানীতে নিয়ে যেতে এদের ভূমিকা আছে। কাজেই সম্ভব হলে অর্গানিক সবজি খাওয়ার চেষ্টা করুন। শুয়ে-বসে থাকবেন না। অনিয়মিত জীবনযাপন করবেন না।
নিউজবাংলা/একে