মায়ের দেহ বিক্রির টাকায় শিক্ষিকা হলেন মেয়ে
নিউজবাংলা: ২২আগষ্ট,শনিবার:
ঢাকা: কেউই তার সাহায্যে এগিয়ে আসেননি যখন স্বামী মারা যায় । তিন কন্যা সন্তানকে নিয়ে একাই জীবনের ঘানি টেনেছেন তিনি। মেয়েদের পড়াশোনার খরচ জোগাতে অবশেষে দেহ ব্যবসায় নেমেছিলেন। আর সেই পয়সায় তিন সন্তানই পড়াশোনা শিখেছে। তাদের মধ্যে একজন এখন পেশায় শিক্ষক।
ভারতের মুম্বাইয়ের এই ঘটনাটি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হচ্ছে। কেননা নিজের মায়ের ভাগ্যবিপর্যয়ের কাহিনী তুলে এনেছেন ওই শিক্ষিকা মেয়ে।
.
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘হিউম্যানস অফ বম্বে’ নামের এক পেজে নিজের ও মায়ের জীবনের কথা তুলে ধরেছেন এই তরুণী। জানিয়েছেন, তার বাবার মৃত্যুর পর তিন কন্যাসন্তানকে নিয়ে অকুল পাথারে পড়েছিলেন তার মা। সকলের কাছে বোঝা হয়ে দাড়িয়েছিলেন তারা।
তার মামা তাদের ঘরভাড়া দিতেন বলে, পুরো পরিবারকেই শাসন করতেন। এমনকি বোরখা ছাড়া বাইরে বেরুলে তাদের মারধোর করা হবে বলে হুমকিও জানিয়েছিল তরুণীর মামা।
তিনি জানিয়েছেন, তার বাবা মুসলিম ধর্মালম্বী হলেও কখনও গোঁড়া ছিলেন না। মেয়েদের পড়াশোনার ব্যাপারেও যথেষ্ঠ সচেতন ছিলেন। কিন্তু বাবার মৃত্যুর পরই তাদের জীবনে নেমে আসে অন্ধকার।
অবশেষে তার মা দেহবিক্রিকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন। তবে মেয়েদের এ অন্ধকারে টেনে আনেননি। তাদের পাঠিয়ে দেন হোস্টেলে। ৮ বছর পর এক এনজিও-র সহায়তায় পুরো পরিবার আবার এক হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। যৌনকর্মীর সন্তান – এ কথা দুনিয়ার সামনে জানাতে কোনও কুণ্ঠা করেননি ওই তরুণী, কেননা এই পেশাতে থেকেই তাদের তিন বোনকেই পড়াশোনার করিয়েছেন তার মা। নিজে অন্ধকারে থেকেও আলোয় পাঠিয়েছেন তার পরবর্তী প্রজন্মকে।
আজ এই তরুণী এক শিক্ষিকা। আর তাই সব যৌনকর্মীর সন্তানদের উদ্দেশ্যে তার বক্তব্য, কেউ যেন পড়াশোনা যেন বন্ধ না করেন। আজ যখন সকলে তাকে দেখে খুশি হয়, তার মনে হয় আরও অনেক দায়িত্ব পালন করতে হবে তাকে।
শুধু যৌনকর্মীর সন্তানদের জন্য নয়, সেই যৌনকর্মীদের জন্যও কিছু করতে চান তিনি, তার মায়ের মতোই অনোন্যপায় হয়ে যাদের বেছে নিতে হয়েছিল এই পেশা।
নিউজবাংলা/একে