নিউজবাংলা: ৩০আগষ্ট, রবিবার:
ঢাকা: প্রথমবারের মতো জাতীয় ন্যূনতম মজুরির হার নির্ধারণ করেছে মিয়ানমার সরকার। শ্রমিক সংগঠন ও কর্মীদের সঙ্গে কয়েক মাসের তিক্ত আলোচনার পর এ সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর কথা দেশটির সরকারি সংবাদ মাধ্যম।

দেশটিতে প্রতি ৮ ঘণ্টা কাজের জন্য দৈনিক ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৬০০ কিয়াট (২ দশমিক ৮০ ডলার)। সংবাদ মাধ্যমের তথ্যানুযায়ী সোমবার থেকে এ নূন্যতম মজুরি কার্যকর হবে।
মিয়ানমারের সব খাত ও শিল্পের কর্মীদের ক্ষেত্রেই এ মজুরি কাঠামো প্রযোজ্য হবে। তবে ১৫ জনের কম কর্মী বিশিষ্ট ক্ষুদ্র ব্যবসা পরিচালনাকারীরা এ মজুরি কাঠামোর বাইরে থাকবে। মজুরি বৃদ্ধি ও উন্নত কাজের পরিবেশের দাবিতে বহু দিন ধরেই আন্দোলন করছেন উন্নয়নশীল দেশটির শ্রমিকরা। বিশেষ করে ২০১১ সালে সামরিক জান্তার এক দশকের শাসনের সমাপ্তির পর থেকেই দাবি আদায়ের প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন ক্রমবর্ধমান গার্মেন্ট খাতের কর্মীরা।
গত শুক্রবার এক ঘোষণায় নতুন মজুরি কাঠামোর ঘোষণা দেয় জাতীয় ন্যূনতম মজুরি কমিটি। ২০১৩ সালে মজুরি বিষয়ক একটি আইন অনুমোদনের পর থেকেই বিভিন্ন শ্রমিক দল, চাকরিদাতা ও কর্মীদের সঙ্গে তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে কয়েক দফায় আলোচনা করে সরকার।
দেশটির আধাসামরিক সরকারের চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের অংশ হিসেবেই মূলত এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। দেশটির ওপর থেকে বেশির ভাগ আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর তাদের সরকারের গৃহীত বিভিন্ন সংস্কারমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য হারে বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছে দেশটি। বিশ্বের বড় বড় ব্র্যান্ডগুলো বর্তমানে দেশটিতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করছে।
তবে পশ্চিমা ম্যানুফ্যাকচারাররাও মিয়ানমারের নিম্ন মজুরি হারের সমালোচনা করেছে। কম মজুরি উত্পাদনবিমুখিতা তৈরি করে দাবি করে মজুরি বৃদ্ধিতে মিয়ানমার সরকারকে বেশ কিছুদিন ধরেই চাপ প্রয়োগ করে আসছে তারা।
মিয়ানমারের কর্মীরা দৈনিক ন্যূনতম ৪ হাজার কিয়াট (৩ দশমিক ১০ ডলার) মজুরির দাবি জানাচ্ছিলেন। বেশ কয়েক মাস ধরেই মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে কারখানার বাইরে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছিলেন শ্রমিকরা। বিভিন্ন সময়ে আন্দোলনরত বেশ কয়েকজন শ্রমিককে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।
মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডে দৈনিক ন্যূনতম মজুরি নির্ধারিত হয়েছে ৩০০ বাথ (৮ ডলার)। থাইল্যান্ডে প্রায় ২০ লাখ মিয়ানমারের নাগরিক কর্মরত রয়েছেন। তবে মানবাধিকার গ্রুপগুলো দাবি করছে, মিয়ানমারের অভিবাসীরা নির্ধারিত হারের তুলনায় কম মজুরি পেয়ে থাকেন। এছাড়া কাজের মানহীন পরিবেশের পাশাপাশি শোষণ ও বঞ্চনার শিকারও হন তারা।

নিউজবাংলা/একে