নিউজবাংলা- ১২সেপ্টেম্বর শনিবার:

ঢাকা: কম্পিউটার ব্যবহার করেন আর ভাইরাসের কবলে পড়েননি এমন লোক খুঁজে পাওয়া দুস্কর। হরহামেশাই ভাইরাস আপনার কম্পিউটারে হানা দেয়। আপনার নিজস্ব ফাইল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ওলট-পালট করে দেয়।

এমনকি ভাইরাসের দ্বারা আপনার অপারেটিং সিস্টেম ক্ষতি গ্রস্থ হতে পারে। ভাইরাস কম্পিউটার থেকে মুছে ফেলতে পারে আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত।
কম্পিউটারের দুনিয়ায় নানা কিসিমের ভাইরাস রয়েছে। এই যেমন ম্যালওয়্যার, ট্রোজান। এমন কিছু ভাইরাস আছে যা আপনার কম্পিউটারে ঢুঁকলে আর রক্ষা নাই। তাই চিনে নিন এসব ভাইরাসে জাত-পরিচয়। তবে হ্যা, ইন্টারনেটের দুনিয়ায় অচেনা লিংকে ক্লিক করছেন তো ফেঁসেছেন। তাই সাবধান!

১) IloveYou: এই মধুর শব্দটা যতই সুন্দর হোক না। এই নামের ভাইরাসটি কিন্তু ভয়ংকর। এর প্রভাব কতটা ভয়ানক তা টের পাওয়া গিয়েছিল ২০০০ সালে। প্রথম দেখা গিয়েছিল ফিলিপিন্সে। নিমেষের মধ্যে বিশ্বের মোট কম্পিউটারের ১০ শতাংশ একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছিল। মোট ক্ষতির পরিমাণ ছিল ৫০০ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি।

২) My Doom: ইতিহাসে এর থেকে ভয়ঙ্কর ভাইরাস নাকি জন্মায়নি! প্রথমবার দেখা গিয়েছিল ২০০৪ সালে ২৬ জানুয়ারি। ই-মেল মারফত সারা বিশ্বে ছড়িয়ে যায়। এর অন্য একটি নামও রয়েছে, Novarg. প্রায় ২০ লক্ষ কম্পিউটার এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বিশ্ব জুড়ে ইন্টারনেট পরিসেবা বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছিল। এর ফলে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩ হাজার ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার।

৩) Sobig F: এই ভাইরাস আপনার কম্পিউটারের নিপাট ভদ্রলোক সেজে এসে দাঁড়াবে এবং আপনার কাছেই ঢোকার অনুমতি চাইবে। অর্থাত্ স্প্যাম মেইল হিসাবে ঢুকেও আপনাকে এটা বোঝাবে যে সে একটি সঠিক অ্যাড্রেস থেকে এসেছে। এ ভাবেই ২০০৩-এ ২০ লক্ষ সিস্টেমের বারোটা বাজিয়েছিল। কম্পিউটারে ঢোকার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিজের ১০ লক্ষ কপি তৈরি করে ফেলে এই ভাইরাস। ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকার ক্ষতি করেছিল এই ভাইরাস।

৪) Code Red: ইনি হোয়াইট হাউসের কম্পিউটারকেও নাচিয়ে ছেড়েছেন। ২০০১-এর ১৩ জুলাই এটি প্রথম দেখা যায়। মাইক্রোসফট ইন্টারনেট ইনফর্মেশন সার্ভারের একটি খুঁতকে কাজে লাগিয়ে ৪ লক্ষ সার্ভারকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এটি। বিশ্ব জুড়ে ক্ষতির পরিমাণ ছিল ২৫০ কোটি মার্কিন ডলার।

৫) SQL Slammer: ২০০৩-এ প্রথম দেখা যায়। মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে ৭৫ হাজার সার্ভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ব্যাঙ্ক অফ আমেরিকা থেকে ৯১১ সার্ভিস সবই প্রভাবিত হয়েছিল এর জন্য। মোট ক্ষতির পরিমাণ ছিল ১২০ কোটি মার্কিন ডলার।

৬) Melissa: অন্যতম সাঙ্ঘাতিক তাতে কোনও সন্দেহ নেই। ১৯৯৯ সালে ২৬ মার্চ প্রথম লক্ষ্য করা যায়। প্রথম মাস-মেইলার মাইক্রোভাইরাস। খুব কম সময়ের মধ্যে ৬০ কোটি মার্কিন ডলার ক্ষতি করেছিল এটি। FBI এর সৃষ্টিকর্তা ডেভিড স্মিথ-কে ধরার জন্য আকাশ-পাতাল এক করে ফেলেছিল।

৭) Chernobyl: এটি প্রথম দেখা যায় তাইওয়ানে। এটি কম্পিউটারে ঢুকে Flash BIOS Chip টি এফেক্ট করে এবং সেটি কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এর জন্য বিশ্ব জুড়ে প্রায় ২৫ কোটি মার্কিন ডলারের ক্ষতি হয়।

৮) Storm Worm: ২০০৭-এ বিশ্বের প্রচুর কম্পিউটার ব্যবহারকারী একটি মেইল পেয়েছিলেন। ওতে লেখা ছিল ইউরোপে ঝড়ের কারণে ২৩০ জন মারা গিয়েছেন। যারা এই মেইলটি ক্লিক করে খুলেছিলেন, তাঁদের কম্পিউটার আর ঠিক করা যায়নি। এক কোটি কম্পিউটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বিশ্ব জুড়ে। ক্ষতির হিসাব করা যায়নি।

৯) Conflicker: ২০০৯-এ আবিষ্কার হয় এটি। দেড় কোটি উইন্ডোজ সিস্টেমের বারোটা বাজিয়েছিল এটি। শুধুমাত্র কম্পিউটারই নয়, পেন ড্রাইভ, স্মার্টফোন, এক্সটার্নাল হার্ডডিস্ক সব কিছুর মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে এটি। ফায়ারওয়াল প্রোটেকশন ভলো না হলে কম্পিউটারের যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিমেষে কপি করে ফেলতে ওস্তাদ।

১০) Nimda: অ্যাডমিট কথাটি উল্টো করে লিখলে এই ভাইরাসটি দেখতে পাবেন। ৯/১১-এর এক সপ্তাহ পরে এই ভাইরাসটি বিশ্ব জুড়ে মাত্র ২২ মিনিটের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। কম্পিউটারের যাবতীয় তথ্য, ফাইল ট্রান্সফার এবং শেয়ার্ড ফোল্ডারের ইতিহাস নিমেষে চুরি করে ফেলতে পারে এটি। অনেকে বিশ্বাস করেন, এটি সাইবার টেরর অ্যাটাকেরই একটা অঙ্গ হিসাবে কাজ করেছিল।

নিউজবাংলা/একে