৮ মাসে ৩ বার স্বরাষ্ট্রসচিব পদে রদবদল, ‘অশুভ সঙ্কেত’ বলল কংগ্রেস
নিউজবাংলা: ০১ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার:
ঢাকা: ভারতে নতুন স্বরাষ্ট্র সচিব হলেন রাজীব মহর্ষি। এল সি গোয়েল পদত্যাগ করায় তার জায়গায় এসেছেন রাজীব মহর্ষি। এ নিয়ে চলতি বছরে প্রথম ৮ মাসের মধ্যে তিনবার স্বরাষ্ট্রসচিব পদে রদবদল হওয়ায় রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। খবর রেডিও তেহরান।
গত ফেব্রুয়ারিতে স্বরাষ্ট্রসচিবের পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয় অনিল গোস্বামীকে। পশ্চিমবঙ্গে সারদা কেলেঙ্কারি তদন্তে প্রভাব খাটিয়েছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ। অনিল গোস্বামীর জায়গায় স্বরাষ্ট্রসচিব হন এল সি গোয়েল। কিন্তু মাত্র ছয় মাস না যেতেই সোমবার তিনি স্বেচ্ছায় অবসরের কথা ঘোষণা করে স্বরাষ্ট্রসচিব পদ থেকে ইস্তফা দেন। তার জায়গায় এদিনই নতুন স্বরাষ্ট্রসচিব নিযুক্ত হয়েছেন বিজেপি ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রাজীব মহর্ষি। তিনি অর্থ এবং অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন। রাজীবের জায়গায় নতুন অর্থসচিব হয়েছেন রতন পি ওয়াটল।
এদিকে, স্বরাষ্ট্রসচিব পদে বিজেপি-ঘনিষ্ঠ রাজীব মহর্ষিকে বসানোয় কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছে কংগ্রেস। এ ঘটনাকে গণতন্ত্রের জন্য ‘অশুভ সঙ্কেত’ বলেও মন্তব্য করেছে তারা।
কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা বলেছেন, ‘যেভাবে কোনো আলোচনা ছাড়াই এমনকি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গেও আলোচনা না করে ওই আমলাকে নিয়োগ করা হয়েছে, তা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য শুভ নয়। নরেন্দ্র মোদিকে বুঝতে হবে এভাবে স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব নিয়ে সরকার চলে না।’
আনন্দ শর্মার অভিযোগ, ‘এ থেকে বোঝা যাচ্ছে, সব ক্ষমতা কীভাবে মোদির হাতে কেন্দ্রীভূত রয়েছে। আমলাতন্ত্রকে ভয় দেখানোর জন্য এসব করা হচ্ছে।’
এদিকে, শীর্ষস্তরের আমলাদের একাংশের মতে, কার্যকালের মেয়াদ দেড় বছর বাকি থাকতেই গোয়েল স্বেচ্ছাবসরের ঘোষণা দেয়ায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কায় সোমবার রাতেই তাকে বাণিজ্যিক প্রসার সংস্থা (আইপিটিও)-র অধিকর্তা হিসেবে নিয়োগ করেছে মোদি সরকার।
সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অসন্তোষের জন্য এল সি গোয়েল তার কার্যকালের দেড় বছর বাকি থাকতেই পদ ছেড়ে দিতে বাধ্য হলেন। তাছাড়া জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের তৎপরতায় নাগা শান্তি চুক্তি হলেও স্বরাষ্ট্রসচিব এল সি গোয়েল ওই সময় বলেন, এই চুক্তির ব্যাপারে তিনি বা তার দফতর কিছুই জানেন না! যদিও কেন্দ্রীয় সরকার তখন এই চুক্তিকে ‘বড় সাফল্য’ বলে প্রচার করে।
যদিও শুধু এল সি গোয়েলই নন, এর আগে পররাষ্ট্রসচিব সুজতা সিংকে এভাবে সরানো হয়েছিল। এসপিজি প্রধান দুর্গা প্রসাদ, ডিআরডিও প্রধান অমিতাভ চন্দকেও তাদের পদ থেকে আচমকা সরিয়ে দেয়া হয়। মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়, রেল, সড়ক পরিবহণ সংস্থার শীর্ষস্তরেও এক বছরের একাধিকবার রদবদল করার অভিযোগ উঠেছে। এভাবে রদবদলের জেরে রাজনৈতিক মহলে সমালোচনার মুখে পড়েছে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদি সরকার।
নিউজবাংলা/একে