টাঙ্গাইল শ্রী শ্রী কালীবাড়ির বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ
নিউজবাংলা- ১৫ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার:
বিভাস কৃষ্ণ চৌধুরী, টাঙ্গাইল থেকে:
টাঙ্গাইল জেলার ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী কালী বাড়ি মন্দির এমনই এক প্রাচীন মন্দির যার বর্তমান বয়স প্রায় ১০৫ বছর। শুধু বয়সেই এই মন্দিরটি অলঙ্করিত নয় মন্দিরটি কারুশিল্পের এক অপূর্ব নিদর্শন। তবে সম্প্রিতি খোঁজ নিয়ে মন্দিরটির কারুশিল্পের পাশাপাশী অনেক অনিয়মের সন্ধান পাওয়া যায়।
বিগত ১৬/৬/২০১৩ তারিখে জেলা পরিষদের নিকট থেকে শ্রী শ্রী কালীবাড়ির আলোকস্বজ্জা জনিত উন্নয়ন মূলক কাজের জন্য আট লক্ষ টাকার একটি টেন্ডার নেওয়া হয়েছিল কিন্তু টেন্ডার নেওয়ার প্রায় দুই বছর ৩ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও শ্রী শ্রী কালীবাড়ির আলোকস্বজ্জা জনিত উন্নয়ন মূলক কোন প্রকার দেখা মিলেনি।
আর টেন্ডারটির ঠিকাদার জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, টাঙ্গাইলের খান পরিবার সহযোগি জেলা পুজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি ও টাঙ্গাইল বড় কালীবাড়ির (১নং) কার্যকরি সদস্য সুভাষ চন্দ্র সাহার সাথে এব্যাপারে বারবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে গিয়ে আমরা ব্যর্থ হই। নিকুঞ্জ পাঠাগার নামে একটি লাইব্রেরি ছিল। সেই পাঠাগারটি টাঙ্গাইল শ্রী শ্রী কালীবাড়ির বর্তমান সাধারন সম্পাদক আশিষ কুমার চৌধুরী তার পরিবারের নামে দখলের পায়তারা করতেছে। সেই রুমটি হল সেকান্দার হরিজন দান করেন।
এবিষয়ে শ্রী শ্রী কালীবাড়ির হিসাবরক্ষক নীল কমল পালের নিকট জানতে চাইলে তিনি এই টেন্ডারের আট লক্ষ টাকার কোন হিসাব দেখাতে পারেননি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের জানান, আলোকস্বজ্জার এই আট লক্ষ টাকার টেন্ডারের কথা সত্য তবে নির্বাচিত হিসাবরক্ষক হওয়ার পরও আমাকে জোরপূর্বক এই পদ থেকে দূরে রাখা হয়েছে আর আলোকস্বজ্জা জনিত কোন প্রকার উন্নয়ন মূলক কাজ মন্দিরে হয়নি বলেই আমার নিকট টেন্ডারটির কোন হিসাব নেই। তিনি আরও বলেন সুভাষ চন্দ্র সাহা ক্ষমতায় আসার পর জোরপূর্বক শ্রী শ্রী কালীবাড়ির প্রায় চল্লিশ জনের মত আজীবন সদস্যপদ ও উপদেষ্টাপদ বাতিল করেন, যার মধ্যে একজন হলেন টাঙ্গাইল শহরের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত মেয়র মানবেন্দ্র পাল মিলটন। আর এক্ষেত্রে টাঙ্গাইল শহরের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত মেয়র মানবেন্দ্র পাল মিলটন তার আজীবন সদস্যপদ বাতিলের সত্যতা স্বীকার করেন। কিন্তু হাইকোর্টে এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে পরে তিনি তার সদস্যপদ ফিরে পান।
শ্রী শ্রী কালীবাড়ির সাবেক সাধারন সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র গুহ এই টেন্ডার দুর্নীতির সত্যতা স্বীকার করে বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে বেশ কিছু অনিয়মের কথা তুলে ধরেন। তার ভাষ্যমতে বর্তমান কমিটি বিগত ১৯/১২/২০১২ তারিখে টাঙ্গাইল শ্রী শ্রী কালীবাড়ির ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত মাত্র দুইটি আনুষ্ঠানিক মিটিং এর আয়োজন করে, যেখানে মন্দির কমিটির বিধি মোতাবেক প্রতি বছর আনুষ্ঠানিক মিটিং করার কথা সর্বনিম্ন তিনটি। মন্দির কমিটির বিধি মোতাবেক সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে কমিটির বাজেট মিটিং আর এই কমিটি ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত একটিও বাজেট মিটিং এর আয়োজন করেনি এক্ষেত্রে সাধারণ সভার মিটিং তো প্রশ্নেই আসেনা। বিগত দুই বছরের নামযজ্ঞ অনুষ্ঠানেরও কোন হিসাব এই কমিটি দেখাতে পারেনি। এমনকি গত ১৯/১২/২০১৪ তারিখ কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও বর্তমান কমিটির সদস্য বৃন্দ এখন পর্যন্ত ক্ষমতায় থেকে অব্যাহতি দেননি। প্রায় তিন বছর পার হয়ে গেলেও ক্ষমতার অপব্যবহার করে তারা স্বপদে টিকে আছে।
নিউজবাংলা/একে