ঢাকা: চলচ্চিত্র নায়ক চৌধুরী মোহাম্মহ ইমন ওরফে সালমান শাহ (২৫) হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য ১৯ বছর পরও আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তার মা নিলুফার চৌধুরী ওরফে নিলা চৌধুরী (৬৫)।
হত্যাকান্ডের ১৮ বছর পর র্যারকে পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেওয়ার মাধ্যমে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনের একটি পথ তৈরি হলেও সেখানে বাধা সৃষ্টি করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
বিচার বিভাগীয় তদন্তের ওপর নারাজির পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সিএমএম আদালত র্যাবকে মামলাটি পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেয়।
ওই আদেশে আসামিরা সংক্ষুব্ধ না হলেও রাষ্ট্রপক্ষ সংক্ষুব্ধ হয়। স্বয়ং ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু পুনঃতদন্তের আদেশ বাতিলের জন্য রিভিশন মামলা দায়ের করেন। ওই রিভিশনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ রিভিশন মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পুনঃতদন্তর আদেশ স্থগিত করেন। ফলে বন্ধ হয়ে যায় র্যাবের তদন্ত।
মঙ্গলবার সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরী সালমান শাহ ভক্তকুল নিয়ে আদালতে আসেন। ওই সময় শালমান শাহ ভক্তকুল সিএমএম আদালতের সামনে সালমান শাহ হত্যার বিচারে দাবিতে ব্যানার নিয়ে শ্লোগান দেয়। তাতে যোগ দেন ছাত্র লীগের সাবেক সভাপতি সালমান শাহের মা নীলা চেধুরী (১৯৬৮-১৯৬৯)।
ওই সময় নীলা চৌধুরী জানান, রিভিশন মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত র্যাব তদন্ত করতে পারছে না। আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর রিভিশন মামলার শুনানি হবে। তিনি বলেন, বাবি হিসেবে রাষ্ট্রপক্ষ বাদির পক্ষেই থাকবে। কিন্তু এখানে রাষ্ট্রপক্ষ আমার বিপক্ষে গিয়ে রিভিশন মামলা করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষের ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু হত্যাকারীদের পক্ষ নিয়ে রিভিশন মামলা করেছে।
নীলা চৌধুরী নারাজীতে মাফিয়া ডন আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অপর ১০ জন হলেন, সালমান শাহের স্ত্রী সামিরা হক, সামিরার মা লতিফা হক লুসি, রিজভী আহমেদ ওরফে ফরহাদ, এফডিসির সহকারী নিত্য পরিচালক নজরুল শেখ, ডেভিড, আশরাফুল হক ডন, রাবেয়া সুলতানা রুবি, মোস্তাক ওয়াইদ, আবুল হোসেন খান ও গৃহপরিচারিকা মনোয়ারা বেগম।
২০১৪ সালের ৮ ডিসেম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
ওই বছর ২১ ডিসেম্বর নিলা চৌধুরী আদালতে হাজির হয়ে নারাজি দাখিলের জন্য সময় প্রার্থনা করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহের লাশ ১১/বি নিউ ইস্কাটন রোর্ডের ইস্কাটন প্লাজার বাসার নিজ কক্ষে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে তাকে প্রথমে হলি ফ্যামিলি পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে।
এ নিয়ে সালমান শাহের পিতা কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন। ঐ মামলা প্রথমে রমনা থানা পুলিশ পরে ডিবি পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবির তদন্ত করেন। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার ময়না তদন্ত হয়। প্রতিবেদনে তারা সালমান শাহর মৃত্যু আত্মহত্যা জনিতকারণে হয়েছে মর্মে উল্লেখ করেন। পরে সালমান শাহর পরিবার ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আপত্তি দিলে সালমানের লাশ কবর থেকে তুলে ফের ময়না তদন্ত করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিবেদনে, লাশ অত্যধিক পচে যাওয়ার কারণে মৃত্যুর কারণ নির্ণয় কারা সম্ভব হয়নি বলে উল্লেখ করেন।